Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মার, তালদিতে গ্রেফতার অভিভাবক

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে লোকজন নিয়ে গিয়ে এক প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠল এক ছাত্রের অভিভাবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার তালদি রেল স্টেশন চত্বরে। প্রহৃত তালদি মোহনচাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় নস্করের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই অভিভাবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম আনসার গাজি।

সঞ্জয় নস্কর। —নিজস্ব চিত্র।

সঞ্জয় নস্কর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৪
Share: Save:

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে লোকজন নিয়ে গিয়ে এক প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠল এক ছাত্রের অভিভাবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার তালদি রেল স্টেশন চত্বরে। প্রহৃত তালদি মোহনচাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় নস্করের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই অভিভাবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম আনসার গাজি।

বিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আনসারের ছেলে ওই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ক্লাসে দুষ্টুমি করায় সোমবার শ্রেণিশিক্ষক তাঁকে চড় মারেন। ঘটনার কথা জানতে পেরে ওই দিন বিকেলে ছেলেটির বাড়ির লোকজন স্কুলে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়েও দেন। মঙ্গলবার ছুটির পরে বিকেল ৫টা নাগাদ প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়বাবু অন্য কয়েক জন শিক্ষকের সঙ্গে তালদি স্টেশনে যাচ্ছিলেন বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরতে। অভিযোগ, আনসার-সহ বেশ কয়েক জন আচমকাই সঞ্জয়বাবুর উপরে চড়াও হন। তাঁকে গালিগালাজ করা হয়। কিল, চড়, ঘুসি মারা হয়। সহকর্মীরা কোনও রকমে তাঁকে উদ্ধার করে স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে যান। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ক্যানিং থানার ওসি সতীনাথ চট্টরাজ স্কুলে চলে আসেন। তিনিই সঞ্জয়বাবুকে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর প্রাথমিক চিকিত্‌সা হয়।

পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক। এর পরেই আনসারকে ধরে পুলিশ। সঞ্জয়বাবু বলেন, “ক্লাসে দুষ্টুমি করায় শ্রেণিশিক্ষক একটি ছেলেকে শাসন করেন। তা নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে বিষয়টি মিটিয়েও দেওয়া হয়। তার পরেও আমাকে অন্যায় ভাবে মারধর করা হল।” পুলিশ জানিয়েছে, অন্য অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ধরা হবে।

ঘটনার পিছনে অবশ্য রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে বলে কানাঘুসো শুরু হয়েছে এলাকায়। বিদ্যালয় সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে স্কুলের ৪ শতক জমি নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মানবেন্দ্র সর্দারের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিবাদ হয়। বিষয়টি মিটমাটের জন্য তালদি পঞ্চায়েতে সভাও বসে। অভিযোগ, ওই সভায় সঞ্জয়বাবুকে হেনস্থা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য, এ দিন সঞ্জয়বাবুকে হেনস্থার পিছনে শাসক দলের স্থানীয় কিছু লোকের ইন্ধন থাকতে পারে। সঞ্জয়বাবু এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেন, “স্কুলের একটি জমি নিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাদ হয়েছিল। তা নিয়ে আমাকে হেনস্থা হতে হয়েছিল। খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। এ নিয়ে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম।” তালদি পঞ্চায়েতের প্রধান কালীচরণ মালের অবশ্য দাবি, “এক ছাত্রের অভিভাবকরাই প্রধান শিক্ষককে মারধর করে। এটা খুবই অন্যায়। তবে ওই ঘটনায় তৃণমূল কোনও ভাবেই জড়িত নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal canning lynching principal taldi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE