রাস্তা তৈরি কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুই মহিলা-সহ জনা দশেক আহত হলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মিনাখাঁ থানার চাপালি পঞ্চায়েতের বকচোরা গ্রামে। অভিযোগ, গণ্ডগোলের সময়ে অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার পেটে লাথি মারা হয়। ওই মহিলা-সহ আরও দু’জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকচোরা বাজার থেকে ফুলবাড়ি আবাদ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় প্রায় ৬ কিলোমিটারের রাস্তার কাজ নিয়ে গণ্ডগোল শুরু হয়। এক পক্ষের দাবি, কাজের সূচি মেনে রাস্তা লম্বা এবং চওড়া করতে হবে। অন্য পক্ষের বক্তব্য, সূচি অনুযায়ী রাস্তা চওড়া করতে গেলে অনেকের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে বর্তমানে রাস্তা যতটা চওড়া আছে, তেমন রেখেই কাজ করতে হবে। এই নিয়েই এ দিন বেলা ১০টা নাগাদ ওই গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। নিয়ম মেনে রাস্তা চওড়া করার দাবি তুললে সামসুর মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসীকে বকচোরা বাজারে ফেলে অন্য পক্ষ মারধর করে। সামসুর সেখান থেকে পালালে তার বাড়িতে গিয়েও হামলা চালানো হয়। বাধা দিতে গেলে তাঁর আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাসিনা বিবির পেটে লাথি মারা হয় বলে অভিযোগ। হাসিনার শাশুড়ি রহিমা বিবি বলেন, “অসুস্থ বৌমাকে মারছে দেখে তাকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম। কয়েক জন চড়াও হয়ে আমাকেও মারধর করল।”
বসিরহাট জেলা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আরেক গ্রামবাসী আহত আমজেদ আলি মোল্লা বলেন, “রাস্তা চওড়া করা নিয়ে গত কয়েক দিন থেকেই গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে বচসা চলছিল। কাজ শুরু হতেই তা বড় আকার নেয়। এক জন রড দিয়ে আমার মাথায় মারলে জ্ঞান হারাই।”
বকচোরা গ্রামের বাসিন্দা জিশান তরফদার বলেন, “আমরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। জমির মালিকের সঙ্গে গোপনে সমঝোতা করে কেউ কেউ রাস্তা কম চওড়া করতে চাইছে। প্রতিবাদ করলে লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপরেই হামলা চালায়।”
পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য আসরাফ আলি গাজি বলেন, “রাস্তা তৈরিতে যাঁদের জমির অংশ প্রয়োজন হচ্ছে, তাঁরা বহিরাগত কিছু লোক জড়ো করে কাজে বাধা দেন। ফলে এই ঘটনায় রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা সকলকে বলেছি, গ্রামের মানুষের স্বার্থে রাস্তা চওড়া করতে সামান্য দু’চার হাত যেটুকু জমির প্রয়োজন, তা গ্রামবাসীকে দিতে হবে। কেউ কেউ তাতে রাজি না হয়ে কাজ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে গ্রামবাসীদের একাংশের উপরে চড়াও হচ্ছে। ঘটনার নিন্দা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy