Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সুহানার মৃত্যু নিয়ে বিধানসভায় সরব হবেন, আশ্বাস শমীকের

সুহানার মৃত্যুতে দোষী চিকিত্‌সকদের শাস্তির দাবি তুললেন বিজেপির বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। বুধবার স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়ার ভোগলবাড়িতে সুহানার বাড়িতে আসেন তিনি। কথা বলেন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। সুহানার বান্ধবী সেলিমা ও তার বাড়ির লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন। শমীকবাবুর কথায়, “টাকা কিংবা প্রতিশ্রুতি নয়, অবহেলায় মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী চিকিত্‌সকদের শাস্তি চাই।”

সেলিমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপি বিধায়ক।—নিজস্ব চিত্র।

সেলিমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপি বিধায়ক।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
স্বরূপনগর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৯
Share: Save:

সুহানার মৃত্যুতে দোষী চিকিত্‌সকদের শাস্তির দাবি তুললেন বিজেপির বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য।

বুধবার স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়ার ভোগলবাড়িতে সুহানার বাড়িতে আসেন তিনি। কথা বলেন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। সুহানার বান্ধবী সেলিমা ও তার বাড়ির লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন। শমীকবাবুর কথায়, “টাকা কিংবা প্রতিশ্রুতি নয়, অবহেলায় মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী চিকিত্‌সকদের শাস্তি চাই।”

২৫ নভেম্বর দুপুরে তেঁতুলিয়া গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুহানা ও তার সহপাঠিনী সেলিমা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। রড-বোঝাই একটি যন্ত্রচালিত ভ্যান রিকশা চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে তাদের। সুহানাকে ওই রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সুহানার হাতে অস্ত্রোপচার হয়। পর দিন চিকিত্‌সকের পরামর্শে চার ইউনিট রক্ত আনা হয়। কিন্তু সেই রক্ত দেওয়া নিয়ে চিকিত্‌সক-নার্সদের টালবাহানা চলে। বৃহস্পতিবার সকালে মারা যায় ওই কিশোরী।

তদন্ত কমিটি গঠন করে ৪ জন চিকিত্‌সককে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কেন তাদের গ্রেফতার করা হল না, বরখাস্ত করা হল না, কেনই বা লাইসেন্স বাতিল হল না সে সব প্রশ্ন তুলে শমীকবাবু বলেন, “গোটা ঘটনাটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এটা প্রায় খুনের মতো ঘটনা। এর থেকে মর্মান্তিক আর কিছু হতে পারে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা দলের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত নেওয়া হবে।” বিষয়টি বিধানসভাতেও তুলবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক।

ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার প্রতিবাদে স্বরূপনগরে পথ অবরোধ হয়েছে। ১ ডিসেম্বর সুহানার পরিবারের লোকজন দোষীদের শাস্তির দাবিতে এসএসকেএম হাসপাতালের সুপারের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেনছিলেন। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও গোটা ঘটনা লিখিত ভাবে জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি করা হয়।

সুহানার বাবা রুহুল আমিন মণ্ডল এ দিনও বলেন, “রক্ত আনা সত্ত্বেও যারা আমার মেয়েকে বাঁচতে দিল না, তাদের আমি ছাড়ব না। আমাদের মতো আর কোনও বাবা-মায়ের কোল যাতে খালি না হয়, সে জন্য যত দূর যেতে হয় যাব।” শমীকবাবুর সঙ্গে কথা বলার সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুহানার মা সাবিনা বিবি।

ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে শমীকবাবু যান সেলিমাদের বাড়িতে। ভাঙাচোরা একখানা মাটির দেওয়ালের ঘরে কোনও রকমে মাথা গুঁজে থাকে সেলিমারা পাঁচ জন। তারই মধ্যে পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছে ওই কিশোরী। শমীকবাবু জানতে পারেন, স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যার স্বামী ফারুক মণ্ডল এবং সাত্তার গাজির নেতৃত্বে গ্রামের ছেলেরা সেলিমাদের ঘর তৈরির জন্য চাঁদা তুলছে। বিধায়কও কিছু আর্থিক সাহায্য করেন। বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারটি যাতে সরকারি ঘর পায়, সে দিকে দেখা হবে বলে প্রতিশ্রুতিও দেন। সেলিমার মা জাহানারা বিবি বলেন, “বন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে মেয়েটা কেমন য়েন হয়ে গিয়েছে। চিকিত্‌সার প্রয়োজন থাকলেও টাকার অভাবে তা করতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE