Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সাইকেলে পৌঁছে যায় চোলাই

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশের নজরদারি এড়িয়েও বিভিন্ন জায়গায় আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোলাই বিক্রেতারা। মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বেআইনি এই কারবার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সামসুল হুদা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

বহু চেষ্টাতেও বন্ধ হচ্ছে না চোলাই বিক্রি। পুলিশের নজরদারি বহাল। কিন্তু তারপরেও চোলাইয়ের রমরমা দিন দিন বাড়ছে ক্যানিংয়ে।

মগরাহাটে বিষ মদ কাণ্ডে বহু মানুষের মৃত্যুর ঘটনার পরে চোলাই বিক্রি বন্ধ নিয়ে সক্রিয় হয় পুলিশ-প্রশাসন। ক্যানিং মহকুমা তথা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অধিকাংশ চোলাই ঠেক ও চোলাইয়ের ভাটি ভেঙে দিয়েছিল। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশের নজরদারি এড়িয়েও বিভিন্ন জায়গায় আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোলাই বিক্রেতারা। মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বেআইনি এই কারবার।

মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা কোথাও চোলাই বিক্রি হচ্ছে খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। কোথাও যাতে চোলাই বিক্রি না হয় সে জন্য সব সময় নজরদারি চালানো হয়।’’

ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া, হাটপুকুরিয়া, বুড়ির মোড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বিক্রি হচ্ছে চোলাই, স্থানীয় মানুষের অভিযোগ এমনটাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী জানান, চোলাই কারবারিরা বারুইপুরের অর্জুনা, চরণ থেকে চোলাই মদ টিউবের মধ্যে করে নিয়ে এসে ভলেয়া, হাটপুকুরিয়া, দাঁড়িয়া, ঢোসাহাট, জয়নগর এলাকায় বিক্রি করছে। কেউ কেউ আবার প্লাস্টিকের পাউচে করেও চোলাই বিক্রি করছে। অনেকে দোকানে বসে বিক্রি না করে সাইকেলে করে এলাকায় পরিচিত লোকজনকে চোলাই দিয়ে আসে। ঠেকের প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বসেই চলছে চোলাই পান।

বছর দু’য়েক আগে ক্যানিঙের দাঁড়িয়ায় বিষ মদ খেয়ে অনেকে মারা যান। গ্রামবাসীরা ক্ষোভে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে মাইক নিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রচার শুরু করেন। বেশ কিছু ভাটি ভেঙে দেওয়া হয়। নতুন করে যাতে ভাটি গজিয়ে না ওঠে, সে দিকেও নজর ছিল গ্রামের মানুষের। পুলিশও সক্রিয় ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা মইনুল হক বলেন, ‘‘চোলাই খেয়ে বেশ কিছু মানুষ মারা যাওয়ার পরে এলাকার প্রায় সব চোলাইয়ের ভাটি ভেঙে দেয় পুলিশ। চোলাই বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’’ এখন নজরদারি চলে ঠিকই। অভিযোগ, তা এড়িয়েই চলছে কারবার। তবে এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। স্থানীয় মানুষের একাংশও মনে করেন এমনটাই।

বাসিন্দারা জানান, গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে চোলাইয়ের জন্য। বেশির ভাগ বাড়িতেই অশান্তি হচ্ছে। মদের নেশা দ্বিগুণ করতে চোলাইয়ে মেশানো হচ্ছে কীটনাশক, মিথানল, ইউরিয়া। এতে নেশাড়ুদের আকর্ষণ বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর আশঙ্কা। অল্প বয়সেই কেউ হারাচ্ছেন চোখ, কেউ বা কিডনি-‌লিভারের সমস্যায় ভুগছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Brew alcohol Illegal liqour shop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE