Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরির নালিশ, গ্রেফতার তিন

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঠ ব্যবসায়ী তপনের বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়ে এক বছর ধরে ওই চক্রটি এই কারবার চালাচ্ছিল। প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো তপনকে। শুভর বাড়ি মছলন্দপুরের সাদপুরে। নরেন থাকে বারাসতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:২৬
Share: Save:

খরচ নামমাত্র! ভোটার কার্ড পিছু ২ হাজার টাকা, রেশন কার্ড ৫০০ টাকা, আধার কার্ড ১ হাজার টাকা, আর প্যান কার্ড ১৫০০ টাকা।

অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে এ দেশে এসেই দালাল মারফত বাংলাদেশিরা পৌঁছে যেতেন শুভ বিশ্বাসের কাছে। তারপর এই সামান্য টাকার বিনিময়ে পেতেন এ দেশের ভুয়ো ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড এবং আধার কার্ড।

শুক্রবার দুপুরে এক সূত্রে খবর পেয়ে এমনই এক চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম তপন রায়, শুভ বিশ্বাস ও নরেন রায়। তপনের বাড়ি ভাড়া নিয়েই রমরমিয়ে চলছিল ওই ভুয়ো পরিচয় পত্রের কাজ। পরে শুভকে জেরা করে পুলিশ ওই চক্রের মূল পাণ্ডা নরেনকে ধরেছে। ঠাকুরনগর রেলস্টেশন এলাকা থেকে নরেনকে ধরা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার তদন্তে গাইঘাটায় যান। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘ভুয়ো নথিপত্রের মাধ্যমে চক্রটি জাল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড তৈরি করে মোটা টাকায় তা বিক্রি করত। মূলত বাংলাদেশিদের কাছে তা বিক্রি হতো।’’ ধৃতদের জেরা করে ওই চক্রে আরও কারা জড়িত আছে তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঠ ব্যবসায়ী তপনের বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়ে এক বছর ধরে ওই চক্রটি এই কারবার চালাচ্ছিল। প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো তপনকে। শুভর বাড়ি মছলন্দপুরের সাদপুরে। নরেন থাকে বারাসতে। ঘটনাস্থল থেকে এক বাংলাদেশি মহিলাকেও আটক করেছে পুলিশ। তিনি আধার কার্ড করতে এসেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু মানুষ যাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক লোকজনও আছে তাঁদের হাত করেছিল শুভ। চক্রটি স্থানীয়দের ঋণও দিত বলে জানা গিয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ এ দেশের ভুয়ো ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, জন্ম শংসাপত্র, উদ্ধার করেছে। প্রিন্টার, ল্যাবটব, স্ক্যানার মেশিন, চোখের মণির ছবি তোলার যন্ত্র, বায়োমেট্রিক মেশিন, জেরক্স উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি পুলিশ স্থানীয় ডুমা, চাঁদপাড়া, শিমুলপুর, পৃথিবা, বৈরামপুর, মছলন্দপুর ২, ইছাপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জাল সিল, রবার স্ট্যাম্প, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সিলও উদ্ধার হয়েছে। একটি জাল ভারতীয় ২ হাজার টাকা নোটও উদ্ধার হয়েছে। নোটটি একপাশে ছাপা ছিল। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, চক্রটি জাল ভারতীয় টাকাও ছাপাতো। টাকা ছাপানোর জন্য রঙিন একটি মেশিনও ব্যবহার করত চক্রটি। তবে বাংলাদেশের দালাল চক্রও এই কাজে জড়িত বলে পুলিশের দাবি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Identity Cards Fake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE