ভুয়ো সিবিআইয়ের পর এ বার ভুয়ো আইবি!
আইবি অফিসার পরিচয় দিয়ে এক যুবক ঢুকতে চেয়েছিল বাড়িতে। কিন্তু বাড়ির গিন্নির জেরার চোটে তা আর হল না। উল্টে ওই মহিলার চিৎকারে প্রতিবেশীরা বেরিয়ে এসে ওই যুবককে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের কলেজপাড়ায়। দিন কয়েক আগেই বসিরহাটে সিবিআই পরিচয় দিয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি করে চম্পট দিয়েছিল জনা কয়েক দুষ্কৃতী। এরপরেই এই ঘটনায় তটস্থ এলাকাবাসী।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম কল্যাণ পাল। বাড়ি হাসনাবাদের রামেশ্বরপুরের সুতিরহাটি এলাকায়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
কী ঘটেছিল? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের কলেজপাড়ায় বাড়ি পেশায় শিল্পী গোপীনাথ বসু। তিনতলা বাড়িতে তিনি ছাড়াও আট মাসের সন্তানকে নিয়ে থাকেন স্ত্রী নবনীতা। তিনি স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষিকা। এ দিন সকালে কাজে বেরিয়ে যান গোপীনাথবাবু। এরপরেই সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক এসে নিজেকে ‘আইবি অফিসার’ পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢুকে বলে, ‘‘দরজা খুলুন। বাড়ি তল্লাশি করতে এসেছি।’’ হঠাৎ বাড়ি তল্লাশির কথা শুনে ঘাবড়ে যান নবনীতাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘আমার স্বামীর নাম বলছিল দেখে প্রথমে ওই যুবকের কথা বিশ্বাস করি। কিন্তু তারপরেই বসিরহাটের সিবিআই সেজে ডাকাতির কথা মনে পড়ে যায়। তাই আর গ্রিল গেটটি খুলিনি।’’ পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে ওই যুবক বলে গাড়িতে আছে। এতে সন্দেহ আরও বাড়ে বলে জানান নবনীতাদেবী।
পুলিশ জানায়, এরপরেই সাহস করে প্রতিবেশীদের ডাকেন ওই মহিলা। ওই যুবক তখন তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সে আবার ফিরে এসে দরজা খুলতে বলে। তখন নবনীতাদেবী চিৎকার করেন। তাঁর চিৎকারেই পাড়ার লোক বেরিয়ে এসে ওই যুবককে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কল্যাণের ফোন থেকে নম্বর নিয়ে তার মামা উজ্জ্বল পালকে ডাকা হয়েছিল। উজ্জ্বলবাবুর দাবি, কল্যাণের মা শিক্ষিকা। তার দুই দাদা সেনাতে কর্মরত। তাঁর কথায়, ‘‘গোপীনাথবাবু অঙ্কনশিল্পী। কল্যাণও ভাল ছবি আঁকে। সেই বিষয়েই হয়তো কোনও কথা বলতে এসেছিল কল্যাণ।’’ পুলিশকে উজ্জ্বলবাবু জানান, পুলিশের চাকরির জন্য গত পাঁচ বছর আগে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছিল কল্যাণ। তারপর থেকেই সে অসুস্থ।
কিন্তু কেন ওই যুবক ‘আইবি অফিসার’ বলে পরিচয় দিল। বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালাব বলল কেন? এ সব প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে এখন পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy