অসম্পূর্ণ: এখনও তৈরি হল না বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
খড়ের চাল, মাটির দেওয়ালের খুপচি একটা ঘরে ঠাসাঠাসি করে থাকেন চারজন। মায়ের ঠাঁই হয়েছে গোয়ালঘরের পাশে পলিথিনের ছাউনির নীচে। পাশে ইটের দেওয়াল। কিন্তু ছাদ ঢালাই হয়নি। ইন্দিরা আবাস যোজনায় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না মেলায় ঘর তৈরি শেষ করতে পারছেন না রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের কুমড়োপাড়া গ্রামের কালীপদ হালদার।
কুমড়োপাড়া পঞ্চায়েতে ওই পরিবারটি বছর তিনেক আগে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে নতুন বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন পায়। প্রথম কিস্তির টাকা অনুমোদনের পরে নিজের খড়ের ছাউনি মাটির দেওয়ালের বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলেন তিনি। পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন। প্রকল্পের মোট ৭০ হাজার টাকার প্রথম কিস্তির ৩৫ হাজার টাকা খরচও হয়ে যায়। ভেবেছিলেন, পরের কিস্তির টাকা এলে দ্রুত বাড়ির কাজ শেষ করবেন। কিন্তু কোথায় কী! বছর ঘুরে গেলেও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না মেলায় চরম সংঙ্কটে পড়েছে পরিবারটি।
বাড়িতে দিন মজুর কালীপদবাবু, স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়ে এবং মা। কুঁড়ে ঘরের মাটির দেওয়াল ঝুলে পড়েছে। কোনও ভাবে বাঁশের ঠেকনা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে দেওয়াল চাপা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কুঁড়েঘরের সামনে গোয়ালের পাশে পলিথিনে ঢাকা তাঁবুতে বৃদ্ধা মায়ের থাকার জায়গা।
কালীপদবাবুর আক্ষেপ, পঞ্চায়েত ও ব্লকে বার বার আবেদন জানিয়ে জুতোর সুকতলা ক্ষয়ে গেলেও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাচ্ছেন না। তিনি জানালেন, প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, বাড়ি নির্মাণের টাকা বাবার নামে অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু তিনি বছরখানেক আগে মারা গিয়েছেন। কোনও নমিনি না থাকায় টাকা অনুমোদন হচ্ছে না।
সমস্যাটা শুধু কালীপদবাবুর নয়। ওই ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েত এলাকার অনেক উপভোক্তাই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না পেয়ে অথৈ জলে। কেউ ধার করে বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। কেউ কেউ প্রতিবেশীদের বাড়িতে বাস করছেন। কেউ কলকাতায় চলে গিয়েছেন।
মথুরাপুর ২ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, কিছু প্রযুক্তির সমস্যার জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনায় ৩৫২ জন উপভোক্তাকে দ্বিতায় ও তৃতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া যায়নি। দ্রুত টাকা পাঠানো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy