নবকলেবর: ভ্যানে জুড়েছে ব্যাটারি। —নিজস্ব চিত্র।
প্রচারে খামতি নেই। ধরপাকড়, জরিমানাও চলছে। এত কিছুর পরেও বসিরহাট মহকুমায় দুর্ঘটনা কমেনি। বরং বেড়েছে— এমনটাই বলছে পুলিশের পরিসংখ্যান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে বসিরহাট মহকুমায় দু’শোরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ গিয়েছে জনা তিরিশের।
কিন্তু দুর্ঘটনা রোখা যাচ্ছে না কেন? বেআইনি পার্কিং, রাস্তা দখল করে ব্যবসা, বেআইনি যানবাহনের দাপট দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে রয়েছে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো এবং অতিরিক্ত যাত্রী, মালপত্র নিয়ে যাতায়াত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে বসিরহাটের বিভিন্ন প্রান্তে ছেয়ে গিয়েছে ভ্যানো। সেগুলি ডিজেলে চলে। তাদের দেখাদেখি সম্প্রতি সাধারণ ভ্যান রিকশায় লাগানো হচ্ছে ব্যাটারি। ভ্যানোর মতো না হলেও মেশিনের সাহায্যে চলা ওই রিকশা দ্রুত ছুটছে। কিন্তু সরু চাকার হালকা-পলকা গাড়ি এক জায়গায় ব্রেক কষলে দাঁড়াচ্ছে কয়েক হাত দূরে। পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যে বসিরহাট শহরে এই যন্ত্র চালিত রিকশার সংখ্যা পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে। এগুলি মূলত শহরের মধ্যে ছোট রাস্তায় চলে। যা দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে।
দুর্ঘটনা রুখতে এবং আইন-শৃঙ্খলার দিকে নজর রাখতে ইতিমধ্যেই বসিরহাট শহরে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভ্যানো ও যন্ত্রচালিত রিকশা চালানো বন্ধ করতে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। শনিবার ৫টি যন্ত্রচালিত রিকশা আটক। চালকদেরও আটক করা হয়। এসডিপিও শ্যামল সামন্ত বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাতেও কাজ না হলে আগামী দিনে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কী বলছেন চালকেরা? আটক মহম্মদ ইয়াকুব মোল্লা, বিশ্বজিৎ দেবনাথ, রফিকুল গাজি জানান, মানুষ এখন গতি চাইছেন। তাই ভ্যানোয় উঠছেন। জিনিসপত্র নিয়ে কাজেও ভ্যানো ব্যবহার করা হচ্ছে। অটো এবং ভ্যানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারে এসেছে টোটো, ই-রিকশা। মানুষ তাই আর পায়ে টানা রিকশায় যেতে চাইছেন না। রোজগারে ভাটা পড়ছে। বাধ্য হয়ে ৩৫-৪০ হাজার টাকা ধার করে ব্যাটারি ও মোটর লাগাতে হয়েছে রিকশা, ভ্যানে। তাঁরা বলেন, ‘‘এতে পায়ের কষ্ট হয় না, আবার ১৫-২০ কিলোমিটার বেগে যাওয়া যায়।’’
বসিরহাট মহকুমা আইএনটিটিইউসি-র কার্যকরী সভাপতি বাবুলাল সাধুখাঁ বলেন, ‘‘দুঘর্টনা রুখতে ঠিক করেছি, যাঁরা সাধারণ ভ্যান রিকশায় মেশিন বসিয়েছেন তাঁদের ই-রিকশা দেওয়া হবে। এতে দুর্ঘটনা সামলানো সম্ভব হবে। গরিব মানুষের রোজগারও বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy