হাসপাতালে উত্তেজিত দিলু। নিজস্ব চিত্র
জ্বরে ভুগে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে বাদুড়িয়াতেও। অথচ, হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসার জন্য রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসক মাত্র দু’জন। থাকার জায়গা আছে, তবু সব থাকছেন না বিএমওএইচ।
এ সবের প্রতিবাদে সোমবার দিনভর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের চেয়ারে বসে কাটালেন স্থানীয় বিধায়ক আব্দুর রহমান দিলু। সন্ধের দিকে বিএমওএইচ এসে দুঃখপ্রকাশ করেন। চিকিৎসক বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এরপরে চেয়ার ছাড়েন বিধায়ক। বিএমওএইচ সুশীল বণিক বলেন, ‘‘বাদুড়িয়ার বিভিন্ন শিবিরে যাওয়ার ফলে সময় মতো হাসপাতালে আসতে পারেনি।’’ এ বার থেকে হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তবে পাশাপাশি জানান, চেষ্টা করেও চিকিৎসক মিলছে না। এর মধ্যে রাজকুমার মণ্ডল নামে এক চিকিৎসক নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
মাস তিনেক ধরে বাদুড়িয়ার গ্রামে গ্রামে জ্বর ছড়িয়েছে। বাজিতপুর গ্রামে ইতিমধ্যেই ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রামের মানুষের দাবি, সকলেই ডেঙ্গিতে মারা যাচ্ছেন। অথচ, সে কথা স্বীকার করছেন না স্বাস্থ্য দফতর। রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোরও চেষ্টা নেই। মশা মারার উদ্যোগও তেমন চোখে পড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন রুদ্রপুরে গ্রামীণ হাসপাতালে গড়ে দেড় হাজার রোগী আসছেন। হাসপাতালে ৬০টি শয্যা থাকলেও সব সময়েই শ’দেড়েক মানুষ ভর্তি।
পরিস্থিতি দেখতে এ দিন সকালে হাসপাতালে যান বিধায়ক। দেখেন, একজন চিকিৎসক বহির্বিভাগ সামলাচ্ছেন। অন্যজন দোতলায় ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা করছেন। বিএমওএইচের দেখা নেই।
বিধায়ককে দেখা মাত্রই অভিযোগ জানাতে ভিড় করেন রোগী ও পরিবারের লোকজন। বিধায়ক জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়ে চিকিৎসকদের চেয়ারে বসে পড়েন। দিলু বলেন, ‘‘আগেও বলেছি, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে হবে। এলাকায় চিকিৎসা শিবিরের সংখ্যা বাড়াতে হবে। কাদের ডেঙ্গি হয়েছে, তা জানাতে হবে। তা না করে গত দু’দিন ধরে বিএমওএইচের দেখা নেই।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট, বাদুড়িয়া, হাড়োয়া ছাড়াও স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতেও জ্বর ছড়িয়েছে। শাঁড়াপুল গ্রামীণ হাসপাতালে অনেককে মেঝেয় শুইয়ে রাখা হচ্ছে। অসুস্থদের অনেকের দাবি, হাসপাতালে ডেঙ্গির পরীক্ষা না হওয়ায় বাইরে থেকে হাজার-বারোশো টাকা খরচ করে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। যদিও অনেক সময়ে বেসরকারি জায়গা থেকে ভুল রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy