বেহাল: এই ঘাট দিয়েই যাতায়াত। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
না আছে যাত্রিশেড, না পর্যাপ্ত আলো, না জেটি। তবু, নোয়াপাড়ায় কাঙালিঘাটে ভুটভুটির ভাড়া ২ টাকা থেকে বেড়ে ৩ টাকা হওয়ায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। তাঁদের প্রশ্ন, ঘাটের পরিকাঠামোর উন্নতির দিকে নজর না দিয়ে কেন ভাড়া বাড়ানো হল? সরকারের এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিত বলেও মনে করেন অনেকে।
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী জানান, ঘাটের বিষয় নিয়ে ঘাট-মালিক যোগাযোগ করলে নিশ্চয়ই তা সংশ্লিষ্ট দফতরের নজরে আনার ব্যবস্থা করা হবে। ওই ঘাটের মালিক বিজলি প্রামাণিক বলেন, ‘‘২০০০ সাল থেকে ২ টাকা ভাড়ায় পারাপার হচ্ছিল। দু’টি ভুটভুটি, সাত জন মাঝি, প্রতিদিন গড়ে পনেরো লিটার করে ডিজেল লাগে। তারপরেও নানা খরচ আছে। যাত্রী-সংখ্যাও কমছে। ভাড়া না বাড়ালে আর চলছে না।’’
কাঙালি ঘাটের উল্টো পাড়ে হুগলির তেলেনিপাড়া মিল ঘাট। মূলত ভিক্টোরিয়া চটকলের শ্রমিকেরাই রোজ যাতায়াত করেন ওই পথে। চটকলের বেতন খুব বেশি নয়, সে কারণেই ভাড়া বাড়ায় নিত্যযাত্রীরা অসন্তুষ্ট। তার মধ্যে আবার ঘাটের এই দশা। ভাড়া বাড়ায় ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরাও।
অভিযোগ, কাঙালিঘাটের অবস্থা এতটাই সঙ্গিন যে যে কোনও সময় পা পিছলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই ঘাটে ভাড়া নেওয়া হয় ঠিকই। কিন্তু টিকিটের ব্যবস্থা নেই। ফলে, ভুটভুটি দুর্ঘটনায় পড়লে ক্ষতিপূরণও মিলবে কিনা সন্দেহ! যেখানে দু’টি ভুটভুটি চলার কথা, সেখানে একটিতেই পারাপার চলে। ফলে, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের।
সাধারণত প্রতিটি ফেরিঘাটই পুরসভার এক্তিয়ারে থাকে। পুরসভা ইজারা দেয়। পরিবহণ থেকে পরিষেবা— সবটাই দেখেন ইজারাদার। কিন্তু কাঙালিঘাট মালিকানাধীন। ইতিহাস বলে, নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাঁর শাসনকালের শেষ দিকে পার হয়েছিলেন এই ঘাট দিয়ে। করমুক্ত করার সিলমোহর দিয়ে গিয়েছিলেন এই ঘাটের মাঝিকে। সেই থেকে বংশ পরম্পরায় চলছে ঘাট পারাপারের ব্যবসা। বিজলিবাবু জানান, সেই সময় নবাবের পাঞ্জাই ছিল সিলমোহর। এখন তাঁরা অনেকে ঘাটের শরিক। তিন মাস অন্তর শরিকদের দায়িত্ব বর্তায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy