পদ্মফুল ও কাস্তে-হাতুড়ির ধাক্কায় লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে কিছুটা হলেও বেসামাল তৃণমূলের দখলে থাকা মহেশতলা পুরসভা। গত লোকসভা ভোটে মহেশতলা বিধানসভা আসনে এক ঝটকায় ব্যবধান ৩০ হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার হয়ে গিয়েছে।
লোকসভা ভোটের ফল অনুসারে দু’টি ওয়ার্ডে এগিয়ে বিজেপি। আর ১৩টি ওয়ার্ডে সিপিএম। ৩৫টি ওয়ার্ডের ১৫টি তৃণমূলের হাতছাড়া। বাকি ২০টি ওয়ার্ডেও তৃণমূলের থেকে বিরোধীদের ব্যবধান খুব কম। পরিস্থিতি কিছুটা হলেও তৃণমূলের পক্ষে অস্বস্তির।
গত মহেশতলা পুর-নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট হয়। মোট ৩৫টি আসনে বামফ্রন্ট সাতটি আসন পায়। বছর দুয়েক পরই অবশ্য ওই জোট ভেঙে যায়। এ বার কংগ্রেস ৩৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এলাকায় কয়েকটি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের নিজস্ব ভোট রয়েছে বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান প্রশান্ত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও কয়েকটি ওয়ার্ডে জিতব বলে আশাবাদী। গতবার কিছু ওয়ার্ডে তৃণমূল আমাদের কাঁধে ভর দিয়ে জিতেছিল। তার পর নাগরিকদের ধোঁকা দিয়েছে। তাই আমরা জোট ভেঙে চলে এসেছি। গত পাঁচ বছরে নিকাশি পরিকাঠামোই গড়তে পারেনি তৃণমূল বোর্ড।’’ বামফ্রন্টের তরফে মহেশতলা পুর নির্বাচনের দায়িত্বে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রতন বাগচী। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় তৃণমূল যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে তা লোকসভা নির্বাচনের ফলেই স্পষ্ট। বামফ্রন্ট ১৩টি আসনে এগিয়ে। এ বার তা ২০ হলে অস্বাভাবিক নয়।’’ রতনবাবুর অভিযোগ, তৃণমূল বোর্ডের কাউন্সিলররা আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। মানুষ তা দেখেছে। তাই ফের বামফ্রন্টকেই ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন তাঁরা। লোকসভার ভোটের ফলেই সেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।’’ বিজেপি-র রাজ্য নেতা অভিজিৎ দাস (ববি)-র কথায়, গত লোকসভা ভোটে মহেশতলা পুরসভার ১ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দখল নিয়েছে বিজেপি। এ বার আরও আসন বাড়বে।’’ অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষ বিজেপি-র দিকেই আসছেন। বিজেপির হাওয়া গায়েব হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। যদি মানুষ ভোট দিতে পারে, তা হলে শাসক দল টের পাবে।’’
কলকাতা পুরভোটে শাসকদল পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় সন্ত্রাস চালিয়েছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এক্ষেত্রেও একই আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বহিরাগতদের নিয়ে জোর জুলুম করে ভোট করা হবে বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা শুরু করেছে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি। তবে মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস বলেন, ‘‘কলকাতা পুরভোটে সন্ত্রাস হয়েছে বলে শুনিনি। এখানকার ভোটের দিন আমি বাড়িতেই থাকব। এখানে কোনও সন্ত্রাস হয় না। মানুষ ভোট দেন।’’ প্রায় ৪৪ বর্গ কিলোমিটার পুরসভায় নিকাশি সমস্যা নিয়ে অভিযোগে জেরবার পুর প্রশাসন। দুলালবাবুর জবাব, ভূগর্ভস্থ নিকাশি পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অনুদানের আবেদন করা হয়েছে। তা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সমস্যার সমাধান হবে খুব তাড়াতাড়িই। দুশো শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে। উন্নয়ন মানুষ দেখছেন। ইভিএমেই জবাব দেবেন তাঁরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy