Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মশার উপদ্রব অশোকনগরে
Dengue

ফের জ্বরে মৃত্যু, বাড়ছে ক্ষোভ গ্রামে

এই নিয়ে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গিতে তিন জন মারা গেলেন। দিন কয়েক আগে কোয়ালিপোতা এলাকার তনুজা বিবি নামে এক আট মাসের অন্তঃসত্ত্বাও জ্বরে মারা যান হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।

মৃত: অভিজিৎ ঘোষ

মৃত: অভিজিৎ ঘোষ

সীমাম্ত মৈত্র
অশোকনগর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৫
Share: Save:

কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের জ্বরে ভুগে মৃত্যু অশোকনগরে।

মঙ্গলবার রাতে জ্বর আসায় এলাকার এক চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন ভুরকুণ্ডা পঞ্চায়েতের দোগাছিয়ার বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ (৩৫)। কিন্তু জ্বর না-কমায় তাঁকে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে বারাসত জেলা হাসপাতাল হয়ে শুক্রবার তাঁকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার দুপুরে সেখানেই তিনি মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে ‘সেপসিস উইথ মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর’-এর কথা লিখেছেন।

এই নিয়ে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গিতে তিন জন মারা গেলেন। দিন কয়েক আগে কোয়ালিপোতা এলাকার তনুজা বিবি নামে এক আট মাসের অন্তঃসত্ত্বাও জ্বরে মারা যান হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। মৃত্যুতে লাগাম না-পরায় গ্রামবাসীরা মশা নিধন নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকেই দুষছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিয়মিত মশা মরার তেল ছড়ানো হচ্ছে না। ফলে, মশার উপদ্রবও থামছে না। মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এখনও এলাকার অনেকে জ্বরে ভুগছেন।

পরিবারের একমাত্র রোজগেরেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন অভিজিতের স্ত্রী শর্মিষ্ঠা। অভিজিৎ সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। তাঁর চার বছরের মেয়ে রয়েছে। শর্মিষ্ঠা বলেন, ‘‘জানি না কী ভাবে সংসার চালাব? কী ভাবে মেয়েকে মানুষ করব?’’

অভিজিতের মৃত্যুতে ফের মশা নিয়ে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। পঞ্চায়েত ও স্থানীয় প্রশাসন যদি প্রথম থেকে মশা মারতে পুরোদমে উদ্যোগী হতো, তা হলে মৃত্যুতে লাগাম পরানো যেত বলে মনে করছেন তাঁরা। শঙ্কর মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসী কিছুদিন আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন সুস্থ। তিনি বলেন, ‘‘মশা নিধনে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। মশা মারতে তেল ছড়ানো হচ্ছে না।’’ পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মাধাই দে’র অভিযোগ, ‘‘প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মশা মারার নামে কিছু এলাকায় শুধু চুন-ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। তাতে কী হয়? দৌলতপুরের এক জায়গায় শুধু সামান্য মশা মারার তেল ছড়ানো হয়েছে।’’

উপপ্রধান বৃন্দাবন ঘোষের দাবি, ‘‘এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মশা নিধন চলছে। চুন-ব্লিচিংয়ের পাশাপাশি তেল ছড়ানো এবং কামান দাগাও হচ্ছে। সেনডাঙা, হিজলিয়া এলাকায় জ্বরে আক্রান্তদের জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হয়েছে।’’ কিন্তু চুন-ব্লিচিংয়ে কী ভাবে মশা মরবে, প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসী।

ভূরকুণ্ডা পঞ্চায়েত এলাকাটি হাবরা-২ ব্লকের অন্তর্গত। পঞ্চায়েত আটটি। এখনও জ্বরে আক্রান্ত বহু মানুষ বাড়ি বা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ পাইকের দাবি, ‘‘সব পঞ্চায়েতেই মশা মারার জন্য স্প্রে মেশিন ও কামান কেনা হয়েছে। নিয়মিত কেরোসিন, পোড়া মোবিল ও ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে।’’

তা হলে মশার দাপট কমছে না কেন? উঠছে প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Fever Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE