Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতালে জখমের মৃত্যু

যে দু’জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি হাবড়া পুর এলাকায়। তা হলে তাঁরা পঞ্চায়েত এলাকায় গেলেন কেন? স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই দলের নেতৃত্বের কাছে।

শোকার্ত: সুশীল দাসের পরিবার। ছবি: সুজিত দুয়ারি

শোকার্ত: সুশীল দাসের পরিবার। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০২:১৩
Share: Save:

গণপিটুনিতে জখম তৃণমূল সমর্থকের মৃত্যুর হল বারাসত জেলা হাসপাতালে।

সুশীল দাস (৪৫) নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি হাবড়া শহরের দক্ষিণ হাবড়া এলাকায়। সোমবার সন্ধ্যায় হাবড়া ১ ব্লকের পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের যশুরে ৩৩ নম্বর বুথ এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েকজনকে মারধর করে। রাতেই মারা যান উজ্জ্বল শূর নামে এক তৃণমূল কর্মী। পরে মারা যান সুশীল। পুলিশ দু’টি খুনের ঘটনায় অনিমেষ দাস নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। এই নিয়ে উত্তর ও দক্ষিজ়ণ ২৪ পরগনায় ভোটের বলি ৬ জন।

যে দু’জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি হাবড়া পুর এলাকায়। তা হলে তাঁরা পঞ্চায়েত এলাকায় গেলেন কেন? স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই দলের নেতৃত্বের কাছে।

তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, হাবড়া ১ ব্লকের তৃণমূল নেতাদের একটা বড় অংশ চাননি, ভোটের দিন পৃথিবা পঞ্চায়েতের ওই এলাকায় বাইরে থেকে কেউ যান। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আমরা এখানে এমনিতেই সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলাম। চাইনি, বাইরে থেকে কর্মী-সমর্থকদের এখানে জড়ো করা হোক।’’ আর এক নেতার কথায়, ‘‘হাবড়া শহর থেকে অতি উৎসাহী কিছু লোককে পাঠানো হয়েছিল, অথবা তাঁরা নিজেরাই হাজির হয়েছিলেন। সে জন্যও এমন কাণ্ড ঘটল।’’

স্থানীয় বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, ‘‘বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে আমাদের কর্মীদের খুন করেছে। কিন্তু আমরা শান্তি চাই। তাই পাল্টা মার দিচ্ছি না।’’

বিজেপির জেলা সহ সভাপতি বিপ্লব হালদার অবশ্য বলেন, ‘‘যশুরে দুপুর থেকে তৃণমূল ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল। পুলিশকে জানিয়েও ফল হয়নি। পরে এলাকার মানুষই রুখে দাঁড়ান।’’

কী ঘটেছিল যশুরে? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ যশুরে বাইরের কিছু লোক বাইকে করে হাজির হয়। স্থানীয় নেতৃত্ব তাদের ফিরে যেতে বলেন। তখনকার মতো এলাকা ছাড়লেও পরে ফের ফিরে আসে বাইক-বাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ বেশ কিছু মোটর বাইকে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক পৌঁছে যান ভোটকেন্দ্রের কাছে। বুথের বাইরে জমায়েত করেন তাঁরা। সেখানে ছিলেন উজ্জ্বল ও সুশীল। কয়েকজন বুথের মধ্যে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। ভোটার ও ভোটকর্মীকে গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, ছাপ্পা ভোটও করে ওই যুবকেরা।

এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মানুষজন। ঘিরে ধরে শুরু হয় মার। কয়েকজন পালিয়ে যায়। ধরা পড়ে যান দু’তিনজন। তাদের বাঁশ, লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন সুশীল ও উজ্জ্বল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Injured Death West Bengal Panchayat Election 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE