Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিশুর মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগ

বুধবার বিকেল পর্যন্ত শিশু ও মা ভালই ছিলেন। রাতে হঠাৎ মারা যায় শিশুটি। তার মামা বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বুধবার বিকেলেও আমরা দেখে বাড়ি গিয়েছি। তারপর কখন মারা গেল সেই খবর আমাদের হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়নি।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

চিকিৎসার গাফিলতিতে এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।

বুধবার ওই ঘটনার পর হাসপাতালে শিশুর পরিবার বিক্ষোভ দেখান। সুপার শঙ্করলাল ঘোষ ঘটনাটির জরুরি ভিত্তিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে অশোকনগরের কাঁকপুলের বাসিন্দা মমতা চক্রবর্তী হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পর দিন অস্ত্রোপচারের পরে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।

বুধবার বিকেল পর্যন্ত শিশু ও মা ভালই ছিলেন। রাতে হঠাৎ মারা যায় শিশুটি। তার মামা বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বুধবার বিকেলেও আমরা দেখে বাড়ি গিয়েছি। তারপর কখন মারা গেল সেই খবর আমাদের হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, অন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন তাঁরা।

পরিবারের অভিযোগ, শিশুটি ও তার মাকে দেখাশোনার জন্য দিনে ২০০ টাকা দিয়ে আয়া রাখা হয়েছিল। তিনিও খেয়াল রাখেননি। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘দিদির বুকের দুধ ছিল না। এ ক্ষেত্রে অন্য মায়েদের দুধ খাওয়ানো হয়ে থাকে শিশুকে। কিন্তু তা করা হয়নি।’’

যদিও হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টা কোনও শিশু না খেয়ে থাকলেই সে মারা যায়। তা হলে যদি তাকে কিছু খাওয়ানোই না হল, তা হলে তিন দিন কী ভাবে বেঁচে ছিল? হাসপাতালের দাবি, শিশুটির প্রস্রাবও হয়েছে। জল না খেলে তা সম্ভব ছিল না। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘সন্ধ্যার সময়ে হঠাৎ শিশুটির শরীর নীল হতে শুরু করে। শ্বাসকষ্ট হয়। বমির সঙ্গে রক্তও পড়েছিল। ওকে সঙ্গে সঙ্গে এসএনসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দশ মিনিট পড়ে সে মারা যায়।’’ বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ, টাকা দিয়ে আয়া রেখেও তাঁরা দেখাশোনা করেননি। কী ভাবে শিশুটির মৃত্যু হল, তা জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন সুপার শঙ্করবাবু। আয়াদের কী ভূমিকা রয়েছে, তা-ও দেখা হবে বলে জানান তিনি।

হাবরা হাসপাতালে আগেও আয়াদের বিরুদ্ধে রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অনেক রোগীর পরিবারেরা জানান, টাকার জন্য একাধিক রোগীর দায়িত্ব নেন এখানকার আয়ারা। পরে কাউকে দেখাশোনা করতে পারেন না।

রাতে কর্তব্যরত আয়ারা ঘুমোন বলে অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথাও শোনেন না বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, রাতে যদি কোনও রোগীর বাড়ির লোক রোগীর সঙ্গে থাকতে চান। তাঁদের আয়ারাই চোখ রাঙিয়ে থাকতে দেন না বলে অভিযোগ।

এ দিন শঙ্করবাবু আয়াদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, এমন অভিযোগ ভবিষ্যতে উঠলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

মমতাদেবীর স্বামী পরেশবাবু একটি সংস্থায় নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করেন। এটাই ছিল তাঁদের প্রথম সন্তান। এমন ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন ওই দম্পতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Newborn Negligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE