Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কাতরাচ্ছে বাবা, ভুলতে পারছে না ছেলে সুভান

বাড়ির দোরগোড়াতেই আক্রমণ। সুভান আটকানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিন হামলাকারীর সঙ্গে এঁটে ওঠেনি। তার কথায়, ‘‘বাবা রাস্তায় পড়েছিল। আর তিনটে লোক রড দিয়ে এলোপাথাড়ি ঘা মারছিল। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল শরীরটা।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

রড দিয়ে বাবাকে আচমকা মারল একটা লোক। রক্তাক্ত অবস্থায় মোটরবাইক থেকে পড়ে গেলেন তিনি। মাটিতে ছিটকে পড়ল ছেলে সুভানও। তার গায়ে স্কুলের ইউনিফর্ম। সোমবার মাধ্যমিক দিয়ে বাবার সঙ্গে ফিরেছিল সে।

বাড়ির দোরগোড়াতেই আক্রমণ। সুভান আটকানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিন হামলাকারীর সঙ্গে এঁটে ওঠেনি। তার কথায়, ‘‘বাবা রাস্তায় পড়েছিল। আর তিনটে লোক রড দিয়ে এলোপাথাড়ি ঘা মারছিল। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল শরীরটা।’’

ওই অবস্থায় সুভান অটো ডেকে বাবা বিজয় সিংহকে নিয়ে ছোটে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখান থেকে পরে পাঠানো হয় কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মারা যান নৈহাটির হাজিনগরের বাসিন্দা বিজয়বাবু। সোমবার দুপুরে এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই ছেলে সুভানকে মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে স্কুল থেকে এনেছিলেন বাবা। মঙ্গলবার সে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলে সুভান। এ দিনও ইংরেজি পরীক্ষায় বসবে বলে বেরিয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই মন শক্ত করে পরীক্ষার হলে পৌঁছতে পারেনি। ওই কিশোরের কথায়, ‘‘চোখের সামনে বাবাকে মেরে ফেলল ওরা। কিচ্ছু করতে পারলাম না।’’ রাস্তায় পড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন বাবা, সাহায্য চাইছেন— এই দৃশ্যটা ভুলতে পারছে না সে। ১ মে মেয়ে মধু সিংহের বিয়ের ঠিক করেছিলেন বিজয়। সেই বিয়েও এখন অনিশ্চিত। ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় শ্রমিক নেতা দিলীপ সিংহ এবং তার দুই ছেলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। পলাতক তিনজনই। দিলীপের বাড়ির সদর দরজায় তালা। বিজয়ের বাড়ির পাশেই তার বাড়ি। ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘চটকলের ইউনিয়ন দেখত দিলীপ। এই ঘটনার পরে ওকে আর কোনও দায়িত্বে রাখা হবে না। পুলিশ নিশ্চয়ই ওকে গ্রেফতার করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Naihati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE