তরুণীকে ছুরি দিয়ে কোপানোয় অভিযুক্ত পাপ্পু।
অপহৃত এক ছাত্রীকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। যদিও অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি তারা। এর পরেও অবশ্য মেয়েটিকে নিয়মিত উত্ত্যক্ত করত ওই যুবক। বাধ্য হয়ে সেই ছাত্রীকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় তার পরিবার। ভর্তি করা হয় নতুন কলেজে। তাতেও অবশ্য পিছু ছাড়েনি ওই যুবক। বুধবার সন্ধ্যায় ওই তরুণীর উপরে ছুরি নিয়ে হামলা চালায় সে। ক্ষতবিক্ষত করে দেয় চোখমুখ। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে মধ্যমগ্রামে।
মারাত্মক জখম ওই তরুণীকে ভর্তি করা হয়েছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর মুখে অজস্র ক্ষত। আঘাত চোখেও। বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ওই ছাত্রী আদৌ চোখে দেখতে পাবেন কি না, সংশয় রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্ত কাজি পাপ্পু গ্রেফতার হয়েছে। রুজু হয়েছে খুনের চেষ্টার মামলা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার ইয়াজপুরে দিনমজুর বাবার একমাত্র মেয়েটি মাস কয়েক আগে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন সে নাবালিকা। ওই এলাকারই কাজিপাড়ার যুবক পাপ্পুর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করলেও পাপ্পুকে ধরেনি। এর পরে ওই ছাত্রীকে স্থানীয় বেড়াচাঁপা কলেজের প্রথম বর্ষে ভর্তি করা হয়। তার পরেও কলেজে আসা-যাওয়ার পথে পাপ্পু ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পাপ্পুর হাতে-পায়ে ধরেও লাভ হয়নি। তাই মেয়েটিকে মধ্যমগ্রামে এক মাসির বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই বিবেকানন্দ কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয় সে।’’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় মধ্যমগ্রামের বিবেকানন্দ সরণি ধরে এক বান্ধবীর সঙ্গে মাসির বাড়িতে ফিরছিলেন ওই তরুণী। বৃষ্টির জন্য রাস্তায় লোকজন কম ছিল। সেই সুযোগে পাপ্পু পিছন থেকে প্রথমে ভারী কিছু দিয়ে ওই তরুণীর মাথায় আঘাত করে। তিনি মাটিতে পড়ে যান। তার পরে ছুরি দিয়ে তাঁর মুখে কোপাতে থাকে পাপ্পু। আক্রান্ত তরুণীর বান্ধবীর চিৎকারে লোকজন ছুটে আসে। চম্পট দেয় পাপ্পু। রক্তাক্ত তরুণীকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে আর জি করে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার, আরজিকর হাসপাতালে চলছে তরুণীর চিকিৎসা। নিজস্ব চিত্র
এ দিন দুপুরে দেগঙ্গার সোহায় শ্বেতপুর থেকে পাপ্পুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে পুলিশের কাছে সে দাবি করেছে, গত ২০ জুলাই (অপহরণের সময়ে) ওই ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। পুলিশের দাবি, জেরায় পাপ্পু জানিয়েছে, এখন মেয়েটি তাকে আমল না দেওয়ায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। এ দিন ওই তরুণীর দাদা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক নেতা আর পুলিশের ভয় দেখিয়ে এলাকায় দাপটে ঘুরে বেড়িয়েছে পাপ্পু। সেই সময়ে পুলিশ ওকে ধরলে আজ আমার বোনের এই হাল হত না।’’
কী বলছে পুলিশ?
এ দিন অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘ওই সময়ে অভিযুক্ত ফেরার ছিল। সব কিছুরই তদন্ত চলছে।’’ এ কথা শুনে তরুণীর দাদার প্রতিক্রিয়া, ‘‘এখন আর তৎপরতা দেখিয়ে কী হবে? আমার বোনের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তার দায় কে নেবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy