Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বড়বাজার থেকে কেনা হতো যন্ত্রপাতি

পুলিশ জানিয়েছে, এখন সুদাম পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। সুদাম পুলিশকে জানিয়েছে, রতন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করত।

উদ্ধার হওয়া যন্ত্রপাতি। নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া যন্ত্রপাতি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২১
Share: Save:

বছর আঠারো আগে এক বন্ধুর মাধ্যমে সুদামের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল বনগাঁর রতন ন‌ামে এক ব্যক্তির। সুদাম জানত রতন কামারের কাজ করে। কিন্তু অস্ত্র তৈরির কাজটা সেই সুদামকে শিখিয়েছিল। রতনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়টাই কাল হল— জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে সুদাম।

মঙ্গলবার রাতে জঙ্গল-ঘেরা অশোকনগরের বেলেখালি গ্রামে অভিযান চালায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ। সন্ধান মেলে বেআইনি অস্ত্র কারখানার। ধরা পড়েছে পুমলিয়ার সুদাম ও শ্রীকৃষ্ণপুরের মানিক ঘোষ। সুদামকে জেরা করে উদ্ধার হয়েছে ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্র তৈরির প্রচুর যন্ত্রপাতিও আটক করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এখন সুদাম পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। সুদাম পুলিশকে জানিয়েছে, রতন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করত। স্থানীয় দুষ্কৃতী ছাড়াও পাশাপাশি বাংলাদেশের দুষ্কৃতীর কাছে রতন আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করত।

২০০০ সালে বনগাঁ মহকুমায় বন্যা হয়েছিল। হাজার হাজার বাড়ি জলের তলায় চলে যায়। বহু মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল। ওই সময় রতন গিয়ে উঠেছিল অশোকনগরের পুমলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুদাম মজুমদারের বাড়িতে। বেশ কিছুদিন রতন ছিল সুদামের বাড়িতেই ছিল। সে সময় রতনই তাকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা শিখিয়েছিল বলে সুদাম পুলিশকে জানিয়েছে। প্রথমে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করে সে রতনের মাধ্যমে জোগান দিত।

পুলিশ জানিয়েছে, বছর বারো আগে একবার আগ্নেয়াস্ত্র-সহ সুদামকে অশোকনগর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। আদালত থেকে জামিন পেয়ে সুদাম এলাকা ছেড়ে ভিন রাজ্যে চলে যায়। পরে সে বাড়ি ফিরে এসে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কাজ সম্পূর্ণ ছেড়েও দিয়েছিল। ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজকর্ম করত।

তাহলে ফের কেন সে ওই কাজ শুরু করল?

পুলিশকে সুদাম জানিয়েছে, মাস কয়েক আগে রতন যাদের আগ্নেয়াস্ত্র জোগান দিত তাদের একজন তার সঙ্গে যোগোযোগ করে। সে তাকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করে দেয়। ফের সুদামের কাছে তারা কতগুলি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির বরাত দিয়েছিল। সেই জন্য সে বেলেখালি গ্রামে জঙ্গলের মধ্যে ওই আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কাজ করছিল।

বেশ কিছুদিন আগে রতন মারা যায়। কিন্তু তার লোকজন সুদামের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। তারাই তাকে অস্ত্র তৈরির বরাত দেয়।

যন্ত্রপাতি মালপত্র কোথা থেকে আনত সুদাম?

পুলিশকে সুদাম জানিয়েছে, কলকাতার বড়বাজার থেকে কেনা হত অস্ত্র তৈরির যন্ত্রপাতি।

ধরা পড়ে সুদামের এখন আপেক্ষ, ২০০০ সালে বন্যা হওয়া ও রতনের বাড়িতে আসাটাই কাল হল। কিন্তু আর তার ওই কাজ করার ইচ্ছা নেই। ফের অন্য রাজ্যে চলে যাবে সে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতদের আরও জেরা করে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের বয়ানও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Equipment Burrabazar Arms
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE