Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শাসনে খুন তৃণমূল নেতা

বৃহস্পতিবার রাতে শাসনের তেহাটায় বাড়ির পাশেই একটি চায়ের দোকানে খুন হয়ে গেলেন তৃণমূল নেতা ও অঞ্চল সভাপতি সামাদ মোল্লা (৫২)। পুলিশ জানায়, একের পর এক বোমা ও গুলি ছোড়ার পরে কুপিয়ে খুন করা হয় সামাদকে।

সামাদ মোল্লা

সামাদ মোল্লা

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫০
Share: Save:

বেশ কিছু দিন শান্ত থাকার পরে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ফের অশান্ত উত্তর ২৪ পরগনার শাসন।

বৃহস্পতিবার রাতে শাসনের তেহাটায় বাড়ির পাশেই একটি চায়ের দোকানে খুন হয়ে গেলেন তৃণমূল নেতা ও অঞ্চল সভাপতি সামাদ মোল্লা (৫২)। পুলিশ জানায়, একের পর এক বোমা ও গুলি ছোড়ার পরে কুপিয়ে খুন করা হয় সামাদকে। তাঁকে বাঁচাতে যাওয়ায় কোপানো হয় ছেলে হাসানুর মোল্লাকেও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি। মারধর করা হয় চায়ের দোকানিকেও। এই ঘটনায় সামাদের ভাইপো মোতালেব মোল্লার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। এলাকা সূত্রের খবর, মোতালেব শাসক দলে সামাদের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সদস্য। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে।

বাম আমলে মজিদ মাস্টারের অন্যতম ঘাঁটি ছিল তেহাটা। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেখানে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকে বলে অভিযোগ। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সামাদকে এলাকাছাড়া করে এক পক্ষ। তৃণমূল নেতাদের মধ্যস্থতায় ন’মাস আগে গ্রামে ঢোকেন সামাদ। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, সামাদের ফিরে আসাটাই মেনে নিতে পারেননি বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মোতালেব। মাস চারেক আগেও এক বার সামাদের উপরে হামলা হয়। সে বারেও মোতালেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তখন থেকেই গা-ঢাকা দিয়ে আছেন মোতালেব। শাসনের ভেড়ি এলাকা কার দখলে থাকবে, মূলত তা নিয়েই কাকা-ভাইপোর বিবাদ বলে এলাকা সূত্রের খবর।

পুলিশ জানায়, বাড়ির সামনেই চায়ের দোকানে টিভি দেখছিলেন সামাদ। সে সময়ে জনা ছয়েক যুবক হাজির হয়। বোমা ফাটায়। এক জন বন্দুকের নল উঁচিয়ে সামাদকে গুলি করতে গেলে দোকানি রফিকুল ইসলাম বাধা দেন। তাঁকে মারধর করে পাশের খালে ফেলে দেয় হানাদারেরা। দুষ্কৃতীরা সামাদের ঘাড়ে গুলি করে। গায়ে বোমা ছোড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। বোমার শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন সামাদের পরিবারের লোকজন। বাবাকে বাঁচাতে গেলে কোপ মারা হয় হাসানুরের গায়ে। সামাদের স্ত্রী সারা বিবি ঘর থেকে বেরোলে তাঁর দিকেও বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। তার পরে চম্পট দেয়। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে ঘণ্টা চারেক দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। পুলিশ গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। সামাদের ছেলে মিজানুর মোল্লা বলেন, ‘‘আমাদের রাজনৈতিক উত্থান মানতে পারেনি দলের আর এক গোষ্ঠী।’’ যদিও এ দিন গোষ্ঠী-কোন্দলের অভিযোগ স্বীকার করতে চাননি তৃণমূলের জেলা স্তরের নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder TMC Group Clas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE