বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী
মানসিক অবসাদ আর বিভিন্ন মাদকের নেশা গ্রাস করেছিল হালিশহরের বকুলতলার বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীকে। পরিবারের লোকেরা বছর বত্রিশের ওই যুবককে সুস্থ করার জন্য বাড়ির কাছেই জেঠিয়ায় একটি বেসরকারি নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি করান। কিন্তু অবস্থার উন্নতির পরিবর্তে দিন দিন আরও বেশি অবসাদগ্রস্থ হয়ে যাচ্ছিলেন বিশ্বজিৎ— এমনই দাবি পরিবারের লোকেদের। রবিবার দুপুরে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে প্রহৃত হয়ে বিশ্বজিতের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁর বাবা রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। ঘটনায় পুলিশ নেশামুক্তি কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়ে তার মালিক সম্রাট দাস ওরফে ছোটকা-সহ মোট তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মানসিক সমস্যার পাশাপাশি শারীরিক ভাবেও অসুস্থ ছিলেন বিশ্বজিৎ। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে খাওয়ার পরে বিশ্বজিতকে আঘাত করে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের নিরাপত্তা কর্মীরা। তাঁকে স্থানীয় নান্না উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। রবিবার রাতে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবারের লোকজন।
ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের মালিক সম্রাটের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিশ্বজিৎ অন্য চিকিৎসাধীনদের লাগাতার আক্রমণ করায় ওকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়। এতে আমাদের সংস্থার কর্মীরাও জখম হন। তখনই ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মারা যায়।’’ রবীন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, ‘‘বেপরোয়া ভাবে মেরে খুন করে ফেলল আমার ছেলেকে। তার পরে যাতে অভিযোগ না করতে পারি তার জন্যও চাপ দিচ্ছিল।’’
সম্রাটের বক্তব্য অবশ্য মানতে চাননি স্থানীয় বাসিন্দারাও। ‘উত্তরায়ন’ নামে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে আদৌ মানসিক চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা ছিলই না বলে দাবি তাঁদের। এক স্থানীয় বাসিন্দা পারমিতা সরকার বলেন, ‘‘আচমকা এক দিন এখানে নেশামুক্তি ও মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র গজিয়ে উঠতে দেখে অবাক হয়েছিলাম। কখনও কোনও চিকিৎসককে এখানে ঢুকতে
দেখিনি। মাঝে মধ্যে ভিতর থেকে আর্তনাদের মতো শব্দ শোনা যেত।’’ অভিযোগ, প্রতি মাসে চিকিৎসার নামে সাত–আট হাজার টাকা নেওয়া হত ভর্তি থাকা লোকজনের পরিবারের কাছ থেকে। অথচ ঠিক মতো খাবার দেওয়া হত না।
সোমবার জেঠিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অশোক দাস ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে থাকা আট জন রোগীকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy