Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গ্রেফতার কেন, প্রতিবাদে পথ অবরোধ

তবে স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য, আরও আগেই নড়ে বসা উচিত ছিল পুলিশ-প্রশাসনের। অনেক দিন ধরেই চলছে এই কারবার। রোগে ভুগে বা অন্য কারণে মৃত মরা মুরগি পোলট্রি থেকে কিনে টুকরো করে তা ফর্মালিনে চুবিয়ে রাখা হয়।

তদন্ত: মুরগির মাংসের পরীক্ষা। তারাগুনিয়ার মেলার স্টলে। নিজস্ব চিত্র

তদন্ত: মুরগির মাংসের পরীক্ষা। তারাগুনিয়ার মেলার স্টলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৪১
Share: Save:

মরা মুরগির কারবারে জড়িত সন্দেহে যে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছিল বাদুড়িয়া থানার পুলিশ, তাঁদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন এলাকাবাসীর একাংশ। বাদুড়িয়ার মাথাভাঙার কাছে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে বেশ কিছুক্ষণ অবরোধও করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, যারা মরা মুরগি ফর্মালিনে চুবিয়ে রেখে সস্তায় হোটেল-রেস্তোঁরায় বিক্রি করছে, তাদের না ধরে সাধারণ পোলট্রি ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরের এই ঘটনায় পুলিশ এলাকায় গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে জনতার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে পুলিশ আশ্বাস দেয়, প্রকৃত দোষীদের ধরা হবে। এরপরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মরা মুরগির কারবার নিয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করার পরে কিছুটা হলেও নড়ে বসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ-প্রশাসন। বাদুড়িয়ার বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস জানান, ব্লকে ক’টি পোলট্রি আছে, ক’টির ট্রেড লাইসেন্স আছে, তার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আটক করা মরা মুরগির শরীরে ফর্মালিন আছে কিনা, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ২১০টি ফার্মের মুরগির নমুনাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। বাদুড়িয়া পুরসভা এ দিন হোটেল, দোকান, রোল সেন্টারগুলি কী ধরনের মাংস ব্যবহার করছে, তা খোঁজ-খবর করেছে। বিরিয়ানির মুরগি কোথা থেকে আনা হচ্ছে, কোথায় কী অবস্থায় কাটা হচ্ছে, মরা মুরগির মাংস দিয়ে চপ করা হচ্ছে কিনা, এ সব খতিয়ে দেখেন পুরকর্তারা। পুরপ্রধান তুষার সিংহ বলেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া মুরগির ব্যবসা করার অভিযোগে প্রাথমিক ভাবে ১২ জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।’’

তবে স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য, আরও আগেই নড়ে বসা উচিত ছিল পুলিশ-প্রশাসনের। অনেক দিন ধরেই চলছে এই কারবার। রোগে ভুগে বা অন্য কারণে মৃত মরা মুরগি পোলট্রি থেকে কিনে টুকরো করে তা ফর্মালিনে চুবিয়ে রাখা হয়। বরফের ক্রেটে ওই মুরগি রেখে পরে তা সস্তায় চালান করে দেওয়া হয় হোটেল-রেস্তোঁরায়। বাজারে মুরগির মাংস যেখানে ১৬০-১৭০ টাকা কেজি, সেখানে এই মুরগির মাংস বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাকায়। বাদুড়িয়া পুর এলাকার কিছু মানুষ জানালেন, মরা মুরগির কারবার পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগাতেই হয়ে এসেছে এত দিন। এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টে শাসানি দিত ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, শুধু মরা মুরগি বাজেয়াপ্ত করলেই হবে না, তাতে ফর্মালিন মিশেছে কিনা, তা জানতে হলে ছাল ছাড়ানো মাংসের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। এখনও পর্যন্ত যে মরা মুরগি বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তা ড্রেসিং করা নয় বলেই তাঁদের দাবি। সে ক্ষেত্রে ওই মাংস পরীক্ষা করে ফর্মালিন না-ও মিলতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে যেন বেআইনি কারবারের বিষয়টি ধামাচাপা না পড়ে যায়, আশঙ্কা অনেকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE