Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘খাবার-কাকু’দের অপেক্ষায় বসে পথশিশুরা

ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা, কার্গিল পাড়া, রেল লাইনের ধারে ঝুপড়িতে থাকা পরিবারগুলির শিশুরা হঠাৎ যেন আকাশের চাঁদ পেয়েছে হাতে। ‘খাবার কাকু’রা এসেছে বলে ছুটে যাচ্ছে।

সেবা: ক্যানিংয়ের গ্রামে তোলা নিজস্ব চিত্র

সেবা: ক্যানিংয়ের গ্রামে তোলা নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৮:১০
Share: Save:

সুন্দরবনেও পৌঁছে গেল ‘রবিন হুড আর্মি’র হাত।

দেশের নানা প্রান্তে তো বটেই, বিদেশের মাটিতেও শিকড় ছড়িয়েছে রবিন হুড আর্মি। উদ্বৃত্ত খাবার গরিব পরিবার কিংবা পথশিশুদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে তারা। সুন্দরবনের অসহায় শিশুদের মুখেও খাবার তুলে দিতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। আর্মির সদস্যেরা বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ-সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে উদ্বৃত্ত খাবার সংগ্রহ করছে। গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিলি করছে সে সব।

ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা, কার্গিল পাড়া, রেল লাইনের ধারে ঝুপড়িতে থাকা পরিবারগুলির শিশুরা হঠাৎ যেন আকাশের চাঁদ পেয়েছে হাতে। ‘খাবার কাকু’রা এসেছে বলে ছুটে যাচ্ছে। আর্মির সদস্যেরা তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন টাটকা বিরিয়ানি, চিকেন, চাউমিন, ভাত-রুটি।

২০১৪ সালের ২৬ অগস্ট দিল্লির নীল ঘোষ নামে এক যুবক কয়েকজন সঙ্গীসাথীকে নিয়ে তৈরি করেন ‘রবিন হুড আর্মি।’ যারা গরিব, দুঃস্থ, অনাথ পথশিশুদের মুখে খাবার তুলে দিতে উদ্যোগী হন। আর্মির হিসেব অনুযায়ী, ভারতে প্রতি বছর উৎপাদিত খাবারের প্রায় ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়। যার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্না করা খাবারের ২০ শতাংশের বেশি নষ্ট হয়। সেই খাবারই টাটকা অবস্থায় সংগ্রহ করে ক্ষুধার্তদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে আর্মি।

রবিন হুড আর্মির এই কর্মকাণ্ড ভারতবর্ষের ৩০টি শহর ও বিশ্বের ১৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইজিপ্ট, মালয়েশিয়া-সহ নানা দেশে কাজ করে রবিন হুড আর্মি। যাদের এই মুহূর্তে সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।

ক্যানিংয়ের কার্গিল পাড়ার মিনতি সর্দার, ঝুমা মণ্ডলরা বলেন, ‘‘আমাদের রোজ দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটে না। ওঁরা নিজেরা মাঝে মধ্যে আমাদের বাচ্চাদের জন্য নানা ধরনের খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। ও সব খাবার কথা আমরা তো ভাবতেই পারিনি।’’

আর্মির সদস্য সৈয়দ মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘‘বহু মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খেতে পান না। ও দিকে, বহু মানুষ উদ্বৃত্ত খাবার ফেলে দেন। আমরা সে সব সংগ্রহ করি। উদ্বৃত্ত খাবার অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিই।’’

বহু হোটেল, রেস্তোরাঁ এখন নিজেরাই তাঁদের ডেকে সাহায্য করছেন বলে জানালেন আর্মির সদস্যেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food Children ক্যানিং
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE