Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বকুনির ভয়েই আত্মঘাতী স্ত্রী, বলছেন স্বামী

খড়দহের পানশিলার সারদাপল্লিতে স্ত্রী দীপিকা ও একমাত্র মেয়ে, বছর পনেরোর সাথীকে নিয়ে থাকতেন পেশায় কাপড়ের দোকানের কর্মী রাধেশ্যামবাবু।

সাথী এবং দীপিকা।

সাথী এবং দীপিকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

মেয়েকে ঠিকমতো মানুষ করতে গেলে মাকে আরও শক্ত হতে হবে। এ কথা বোঝাতে গিয়ে স্ত্রীকে মাঝেমধ্যে বকাবকি করতেন স্বামী। নবম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরে সেই বকুনির ভয়েই তাঁর স্ত্রী দীপিকা অ্যাসিড খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করলেন স্বামী রাধেশ্যাম নন্দী।

খড়দহের পানশিলার সারদাপল্লিতে স্ত্রী দীপিকা ও একমাত্র মেয়ে, বছর পনেরোর সাথীকে নিয়ে থাকতেন পেশায় কাপড়ের দোকানের কর্মী রাধেশ্যামবাবু। গত রবিবার মায়ের সঙ্গে দোকানে মিষ্টি কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় সাথী। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা, এক দিকে মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তা, অন্য দিকে স্বামীর বকুনির ভয়— এই দুই চাপেই অ্যাসিড খেয়ে নেন দীপিকাদেবী। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। সেই সঙ্গে ওই কিশোরীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অপহরণের মামলা রুজু হয়েছে।

বুধবার নিজের বাড়িতে রাধেশ্যামবাবু বললেন, ‘‘মেয়েটা কোথায় গেল, বুঝতে পারছি না। দীপিকাকে মেয়ের ভালর জন্যই কখনও সখনও বকতাম। কিন্তু তার জন্য যে এত বড় কাণ্ড ঘটবে, তা ভাবিনি।’’ তিনি জানান, রবিবার বিকেলে মেয়েকে নিয়ে মিষ্টি কিনতে গিয়েছিলেন দীপিকাদেবী। মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল দোকানের বাইরে। মিষ্টি কিনে বেরিয়ে দীপিকাদেবী দেখেন, মেয়ে উধাও। কিন্তু তখনই সে কথা স্বামীকে জানাননি তিনি।

রাধেশ্যামবাবুর দাবি, রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ তাঁকে ঘটনাটি জানিয়ে দীপিকাদেবী বলেন, ‘‘মেয়েকে খুঁজে এনে দাও। না হলে আমি আত্মহত্যা করব।’’ স্ত্রীকে এমন কিছু করতে বারণ করে মেয়েকে খুঁজতে বেরোন রাধেশ্যামবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েকে কোথাও না পেয়ে বাড়িতে এসে দেখি, দীপিকা অ্যাসিড খেয়েছে।’’

সাথীর পিসি ডালিয়া দত্ত জানান, এর আগেও এক বার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল ওই কিশোরী। পরে নৈহাটি স্টেশনে তাকে পাওয়া যায়। রাধেশ্যামবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তাঁদের বাড়ির ঠিকা কাজের মহিলা এসে দেখেছিলেন, জোরে পাখা চালিয়ে বসেও ঘামছেন দীপিকাদেবী। এর পরে তিনি তাড়াতাড়ি ওই মহিলাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। মঙ্গলবার রাতে সাথীর ব্যাগ থেকে একটি সিম কার্ড পাওয়া যায়। রাধেশ্যামবাবু বলেন, ‘‘মেয়ের ফোনই ছিল না। কিন্তু শুনছি, মায়ের ফোনে ওই সিম লাগিয়ে মেয়ে নাকি সর্ব ক্ষণ কারও সঙ্গে কথা বলত। কিন্তু এ বিষয়ে দীপিকা আমায় কিছু বলেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE