Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অপহরণের গল্প ফেঁদে গ্রেফতার দুই কলেজছাত্র

তদন্তকারীরা জানান, সোনারপুর থানার গোবিন্দপুর এলাকার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সন্দীপ তাঁর মাকে নিজের মোবাইল থেকে জানিয়েছিলেন, তিন জন তাঁকে কলেজের কাছ থেকে অপহরণ করেছে। কিন্তু পুলিশ কলেজ চত্বরে  খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তেমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।

ধরা পড়ার পরে সন্দীপ ও জুলফিকার। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

ধরা পড়ার পরে সন্দীপ ও জুলফিকার। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩৭
Share: Save:

অপহরণের গল্প ফেঁদে গ্রেফতার হলেন দুই কলেজ পড়ুয়া।

পুলিশ জানায়, সোমবার দুপুরে সোনারপুর স্টেশন এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ রায় নামে এক কলেজ পড়ুয়া ফোনে মাকে জানান, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না দিলে অপহরণকারীরা মেরে ফেলার শাসানি দিচ্ছে। এর পরেই ওই ছাত্রের মা রেণুকা রায় সোনারপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তকারীরা জানান, সোনারপুর থানার গোবিন্দপুর এলাকার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সন্দীপ তাঁর মাকে নিজের মোবাইল থেকে জানিয়েছিলেন, তিন জন তাঁকে কলেজের কাছ থেকে অপহরণ করেছে। কিন্তু পুলিশ কলেজ চত্বরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তেমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।

বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার অরিজিৎ সিংহের কথায়, ‘‘দু’টি বিষয়ে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। সাধারণত অপহরণকারীরা ‘১ লক্ষ ৩০ হাজার’— এমন অঙ্কের টাকা চায় না। ১ লক্ষ, দু’লক্ষ, তিন লক্ষ বা তারও বেশি পরিমাণ টাকা দাবি করে। ঘণ্টা দুয়েক পরে অপহরণকারীরা ১ লক্ষ টাকা ৬০ হাজার টাকা দাবি করছে বলে ফের মাকে ফোন করেন সন্দীপ। বাড়ির কাছে মিশন পল্লিতে টাকা নিয়ে আসতে বলেন মাকে। এতেও পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। কারণ পেশাদার অপহরণকারীরা সাধারণত বাড়ির কাছ থেকে মুক্তিপণ নেয় না।’’

আরও পড়ুন: আসবেন মিত্তল, বিনিয়োগ টানতে স্কটল্যান্ডে মমতা

এর পরেই ওই ছাত্রের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান খুঁজে দেখতে শুরু করে পুলিশ। প্রথমে সোনারপুর পরে পাটুলিতে সন্দীপের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান মেলে। পাশাপাশি সন্দীপের সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জুলফিকার মোল্লা নামে সন্দীপের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর খোঁজ পায় পুলিশ। সোনারপুর থানার উকিলা অঞ্চলে জুলফিকারের বাড়ি পৌঁছে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সন্দীপ বছরখানেক ধরে পরিচিত ও বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে অনলাইনে জামা-প্যান্ট, ঘড়ি, জুতো কিনেছিলেন। এ ভাবে বাজারে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ধার হয়ে গিয়েছে ওই যুবকের। জুলফিকার পুলিশকে জানান, ওই ধার মেটাতেই সন্দীপ অপহরণের গল্প ফেঁদে মাকে ফোন করেন। এমনকী ফোন করার সময় জুলফিকার তাঁর পাশেই ছিলেন বলেও জানান। এর পরেই জুলফিকারকে দিয়ে সন্দীপকে ফোন করায় পুলিশ। জানা যায়, সন্দীপ নিউ গড়িয়া এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে রয়েছেন। গভীর রাতে সন্দীপকে নিউ গড়িয়ায় বন্ধুর বাড়ি থেকে ধরা হয়। জুলফিকার ও সন্দীপকে দফায় দফায় জেরা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বাজারে ধার মেটানোর পাশাপাশি দুই বন্ধু বা়ড়তি কিছু টাকা পকেটে ভরার ছকও কষেছিলেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার জানান, মিথ্যে গল্প ফেঁদে অপরহণের নাটক করে টাকা লুঠের চেষ্টার অভিযোগে সন্দীপ ও জুলফিকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kidnap Fake Students Arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE