শোকার্ত: সাহেনুর বিবির পরিবার। নিজস্ব চিত্র
উত্তর ২৪ পরগনায় ফের জ্বরে মৃত্যু হল দু’জনের।
রবিবার সন্ধ্যায় দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের খাঁপুর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা সাহেনুর বিবির (৪২) মৃত্যু হয় কলকাতার আরজিকরে। সোমবার বিকেলে গুমায় বাড়ি পরিতোষ সরকার (৮৬) বারাসতের একটি নার্সিংহোমে মারা যান। পরিতোষবাবুর মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে, মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর। আর সাহেনুরের মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে সেপ্টেসেমিয়া।
আরজিকরের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন সাহেনুরের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সুস্থ আছে বলে রোগীকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসক। কিন্তু তার পরে রোগীর অবস্থার ফের অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মীদের হাতে-পায়ে ধরলেও ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
তাঁদের আরও অভিযোগ, বাধ্য হয়ে হাসপাতাল চত্বরে খোলা আকাশের নীচেই রোগীকে নিয়ে সারা রাত কাটাতে হয় পরিবারকে। পরের দিন দুপুরে বহির্বিভাগে চিকিৎসককে দেখালে সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য ভর্তি করে নেওয়া হয় তাঁকে। ততক্ষণে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে।
এ দিন এলাকার মানুষ জানান, স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে জ্বর না কমায় বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে সাহেনুরকে নিয়ে যান তাঁর বাড়ির লোকেরা। অভিযোগ, সেখানে জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক সাহেনুরকে দেখে কিছু ওষুধ দিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। সাহেনুরের স্বামী আব্দুল সামাদ সোমবার জানান, জ্বরে দাঁড়াতে পারছিলেন না তাঁর স্ত্রী। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছিল। বমিও করছিলেন সাহেনুর। ওই রাতেই হাসপাতালের চিকিৎসককে ভর্তি নেওয়ার জন্য মিনতি করলেও সাহেনুরকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। সারা রাত চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। পর দিন সকালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য হাসপাতাল চত্বরে স্ত্রীকে নিয়ে রাত কাটাতে হয় বলে জানান আব্দুল।
সাহেনুরের মৃত্যুর কারণ হিসেবে সেপ্টেসেমিয়া লেখায় রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে আরজিকরের চিকিৎসকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয়। প্রথমে চিকিৎসকেরা ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানালেও মৃত্যুর পরে তা লেখা হয়নি বলে অভিযোগ প্রতিবেশী মহম্মদ নুরুজ্জামানের। রোগীর কী চিকিৎসা হয়েছিল, তার কাগজপত্র দেখতে চাইলে হাসপাতাল তা দেখাতে চায়নি বলেও অভিযোগ।
সাহেনুরের ছেলে আবু কালাম এ দিন বলেন, ‘‘শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে থাকতে থাকতে মায়ের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়। শুক্রবার দুপুরে বহির্বিভাগের চিকিৎসক দেখা মাত্রই মাকে ভর্তি করতে বলেন।’’ ততক্ষণে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্ত বেরোতে শুরু করেছে। কালামের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার রাতেই মাকে ভর্তি নেওয়া হলে এমন হতো না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy