প্রতীকী ছবি।
নববর্ষের সকালে ভিড় বাজারে পা ফেলা দায়। গাড়ির জটলা পাশে রেখে রাস্তায় চলছিল প্রভাত ফেরি। তার মধ্যেই বিকট শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা।
একের পর এক বোমা ফাটার শব্দ। মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে গেল রাস্তাঘাট। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাস্তায় বেরিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন এক যুবক। উৎসবের রেশ মিলিয়ে গিয়ে থমথমে হয়ে গেল টিটাগড়ের টাটা গেট এলাকা। রবিবার সকালের ঘটনা। বোমায় জখম হয়েছেন আরও তিন জন।
খড়দহ থানার পুলিশ জানিয়েছে, টোটো স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে এই গোলমালের সূত্রপাত। তার জেরেই লড়াই বাধে দু’পক্ষের মধ্যে। তার জেরে বোমাবাজি আর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। টিটাগড় এবং খড়দহ থানার পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। জখমেরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ আট জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টাটা গেট এলাকার ছোট গাঁধী মোড়ের টোটো স্ট্যান্ডটির দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছে। ওই স্ট্যান্ডে কারা টোটো রাখবে, তা নিয়েই সমস্যা। মাঝেমধ্যেই তা নিয়ে ছোটখাটো ঝামেলা বাধে। কখনও কখনও তা পুলিশ পর্যন্তও গড়িয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
রবিবার সকালে ফের শুরু হয় গোলমাল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ এক জন ওই স্ট্যান্ডে টোটো রাখতে আসেন। তখন তাকে বাধা দেন স্ট্যান্ডের বেশ কয়েক জন টোটোচালক। অভিযোগ, তাঁকে মারধরও করা হয়। প্রহৃত টোটো চালকের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন আরও কয়েক জন টোটোচালক।
স্থানীয়েরা জানান, প্রথমে হাতাহাতি, পরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে শুরু হয়। এর কিছু পরেই আচমকাই বোমাবাজি শুরু হয়। সাত সকালে বোমাবাজিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দা এবং পথচলতি মানুষজন। প্রাণভয়ে ছোটাছুটি শুরু হয়।
ঘটনাস্থলের পাশেই রয়েছে একটি বিস্কুট কারখানা। কী হয়েছে, তা দেখতে কারখানার কয়েক জন কর্মী গেটের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বোমাবাজির মধ্যে আচমকা গুলি চলতে শুরু করে। কারখানার গেটে দাঁড়িয়ে থাকা শাহনওয়াজ আলম নামে এক কর্মীর বাঁ উরুতে গুলি লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এ দিকে বোমার আঘাতে জখম হন আরও তিন জন।
খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পৌঁছয় টিটাগড় থানার পুলিশও। ডাকা হয় কমব্যাট ফোর্স। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শাহনওয়াজকে প্রথমে ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালে, পরে আরজিকর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বোমায় জখমদের প্রথমে খড়দহ বলরাম হাসপাতাল, পরে সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার ( জোন ২) আনন্দ রায় জানান, আট জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy