Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

২১ দিন বিকল হয়ে রয়েছে জলের কল

এ দিকে পানীয় জল না পেয়ে বড় রকম সংকটে পড়েছেন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবন লাগোয়া সাহেবখালি-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

চাহিদা: জল নিয়ে এ ভাবেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।—নিজস্ব চিত্র 

চাহিদা: জল নিয়ে এ ভাবেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।—নিজস্ব চিত্র 

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৫২
Share: Save:

আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে হিঙ্গলগঞ্জের সাহেবখালি গ্রামে। ব্লক কর্তাদের দাবি, মাটির তলার জলস্তর কমছে বলে জল মিলছে না পানীয় জলের কলে থেকে।

এ দিকে পানীয় জল না পেয়ে বড় রকম সংকটে পড়েছেন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবন লাগোয়া সাহেবখালি-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে এক-দু’কিলোমিটার হেঁটে দূরের গ্রামে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পানীয় জল আনতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। অথচ তিন নম্বর সাহেবখালি গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে স্থানীয় কালীবাড়ি এলাকায় মার্ক-২ অর্থাৎ ডিপ টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল।

গত তিন সপ্তাহ ধরে ওই কল অকেজো হয়ে পড়ায় জল মিলছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘‘আমাদের অসুবিধার কথা সাহেবখালি ও দুলদুলি পাশাপাশি দু’টি পঞ্চায়েত প্রধান এবং বিডিওকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’’ সাহেবখালি গ্রামে পানীয় জলের একমাত্র কলটি খারাপ হয়ে পড়ার বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়েছে বলে স্বীকার করে হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় মাটির নীচের জলস্তর নেমে যাওয়ার কারণে বেশ কিছু এলাকার মানুষ ঠিক মতো পানীয় জল পাচ্ছেন না। তিন নম্বর সাহেবখালিতে মার্ক টু গভীর নলকূপ থেকে জল উঠছে না বলে প্রধান আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিককে জানানো হয়েছে।’’

ব্লক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম তিন নম্বর সাহেবখালি। ওই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে কালিন্দী নদী। ও পারে বাংলাদেশ। সাহেবখালি গ্রামের মানুষের জলকষ্ট দেখে ওই গ্রামের কালীবাড়িতে গভীর নলকূপ বসানো হয়। তা দেখে গ্রামের মানুষ আশ্বস্ত হন এই ভেবে যে, এ বারে অন্তত তাঁদের পানীয় জলের সমস্যা মিটবে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই কলটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অসুবিধায় পড়তে হয় দুই, তিন এবং চার নম্বর সাহেবখালির বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, বিষয়টি প্রথমে পঞ্চায়েত প্রধান এবং পরবর্তীতে বিডিওকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের রাত থেকে উঠে দূরের গ্রামের কলে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। অনেকেই আবার বাধ্য হয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়া পানীয় জলের পাইপ ফুটো করে জল নিচ্ছেন।

স্থানীয় কৃষ্ণপদ মণ্ডল, উজ্জ্বল মণ্ডল, স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামে গভীর নলকূপ বসায় পানীয় জলের অসুবিধা দূর হল বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু কয়েকটি দিন যেতে না যেতেই কলটি খারাপ হয়ে যায়। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। ঠিকাদার কল বসানোর টাকা একবার হাতে পেলে আর মেরামতির কাজ করবে না।’’ কাকলি মণ্ডল, সাগরিকা মণ্ডলেরা আরও বলেন, ‘‘এক দিকে সুন্দরবন আর এক দিকে বাংলাদেশ। মাঝে আমাদের বাস। এখানে অনেক সমস্যার মধ্যে পানীয় জল পাওয়াও বড় সমস্যা। গ্রামের কল খারাপ হয়ে গিয়েছে। জল আনতে দূরের গ্রামে যেতে হচ্ছে। জল নিয়ে ফিরতে দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনারও ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় কল মেরামতি অত্যন্ত জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water tap inadequate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE