Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

হাবরায় ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু

 ডেঙ্গির প্রকোপ থামার লক্ষণ নেই। এই রোগে ভুগে ফের প্রাণ গেল হাবরা পুর এলাকার এক যুবকের। হাবরায় জ্বর এবং ডেঙ্গিতে ভুগে এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন জনা কুড়ি। পুর এলাকায় মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৬।

হাহাকার: প্রসেনজিৎবাবুর পরিবার। ছবি: শান্তনু হালদার

হাহাকার: প্রসেনজিৎবাবুর পরিবার। ছবি: শান্তনু হালদার

সীমান্ত মৈত্র
হাবরা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৬
Share: Save:

ডেঙ্গির প্রকোপ থামার লক্ষণ নেই। এই রোগে ভুগে ফের প্রাণ গেল হাবরা পুর এলাকার এক যুবকের। হাবরায় জ্বর এবং ডেঙ্গিতে ভুগে এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন জনা কুড়ি। পুর এলাকায় মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৬।

পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য হাড়িয়ায় থাকতেন প্রসেনজিৎ সরকার ওরফে রানা (৪০)। শনিবার দুপুরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা, ‘ডেঙ্গি ফিভার উইথ মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর।’ প্রসেনজিতের মৃত্যুতে ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ নভেম্বর প্রসেনজিৎ জ্বরে পড়েন। পর দিন সকালে রক্ত পরীক্ষা হয়। সন্ধ্যায় রিপোর্ট এলে জানা যায়, ডেঙ্গি হয়েছে। বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রসেনজিৎকে।

সেখানে অবস্থার বিশেষ উন্নতি হচ্ছিল না বলে সোমবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই যুবককে। পরিবারের অভিযোগ, ওই তাঁকে ভেন্টিলেশন রাখা হয়েছিল। ডায়ালেসিস হয়। ৮০ হাজার টাকা দামের একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারপরেও উন্নতি হচ্ছিল না। শনিবার দুপুরে প্রসেনজিৎকে মৃত বলে জানিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মৃতের শ্বশুর দিলীপকুমার দাস বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের চিকিৎসার গাফিলতিতেই জামাইকে হারাতে হল।’’ তাঁর প্রশ্ন, ভেন্টিলেশন থাকা অবস্থায় কোনও রোগীকে কি ডায়ালেসিস করা যায়? যে চিকিৎসক প্রসেনজিতের চিকিৎসা করছিলেন, মৃত্যুর আগের ২৪ ঘণ্টায় পরিবারের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বলেও অভিযোগ।

প্রসেনজিৎবাবুর দুই ছেলেমেয়ে। মেয়ে সারণ্য চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ছেলে সাগ্নিকের বয়স সবে দুই। স্ত্রী শ্রাবণী বার বার অচৈতন্য হয়ে পড়ছিলেন। প্রতিবেশী মহিলারা তাঁকে শান্ত করবার চেষ্টা করছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, প্রসেনজিৎকে নিয়ে এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল দু’জনের। পুরসভা মাঝে মধ্যে মশা মারার তেল ছড়াচ্ছে। কামানও দাগা হচ্ছে বলে জানালেন বাসিন্দারা। স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের প্রসেনজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘পুরসভার পক্ষ থেকে ওয়ার্ডে যে মশা মারার তেল দেওয়া হচ্ছে, তার গুণমান ভাল নয়। তা ছাড়া, এলাকায় একটি ভ্যাট রয়েছে। সেটিও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। ফলে মশার উপদ্রব কমছে না।’’

পুরসভার পক্ষ থেকে অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় নিয়মিত জঙ্গল সাফাই, নিকাশি নালা পরিস্কার করা ও মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। তেলের মানও ভাল। ভ্যাটও প্রতিদিন সাফ করা হচ্ছে। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘পুরসভার কর্মীরা যখন ওই এলাকায় দু’মাস ধরে মশা মারতে যাচ্ছেন, তখন কাউন্সিলরকে দেখা পাওয়া যায় না। উনি এখন সস্তা রাজনীতি করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Death Young Man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE