Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
অভিযুক্ত জেলা পরিষদের সদস্য

চাকরির নামে প্রতারণা, চলল বিক্ষোভ-ঘেরাও

জেলা পরিষদের ‘পঞ্চায়েত সহায়ক’ পদের জন্য বছর খানেক আগে দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী-সহ দু’জনের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠল তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য মামণি মুর্মুর বিরুদ্ধে। মেমারির গোপ গন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোলে গ্রামের বাসিন্দা রাসবিহারী মণ্ডল ওরফে বাদলের অভিযোগ, ওই টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশে তাঁদের চিনতে অস্বীকার করছেন মামণিদেবী।

বাড়ির সামনে পাহারায় পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির সামনে পাহারায় পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৫ ০১:১৩
Share: Save:

জেলা পরিষদের ‘পঞ্চায়েত সহায়ক’ পদের জন্য বছর খানেক আগে দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী-সহ দু’জনের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠল তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য মামণি মুর্মুর বিরুদ্ধে। মেমারির গোপ গন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোলে গ্রামের বাসিন্দা রাসবিহারী মণ্ডল ওরফে বাদলের অভিযোগ, ওই টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশে তাঁদের চিনতে অস্বীকার করছেন মামণিদেবী। মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির কাছে অভিযোগও করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে টাকা ফেরতের দাবিতে বিজুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবুনিয়া গ্রামে মামণিদেবীর বাড়ি ঘেরাও করেন রাসবিহারীবাবু স্ত্রী, মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য মৌসুমীদেবী ও তাঁর অনুগামীরা। পরে মেমারি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। মামণিদেবী অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
রাসবিহারীবাবু নিজেকে দীর্ঘদিনের কর্মী হিসাবে দাবি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের সদস্য মামণিদেবী তাঁদের এক বছর তিন মাস আগে পঞ্চায়েত সহায়ক পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার বিনিময়ে টাকাও চেয়েছিলেন। সেই মতো তিনি জমি বিক্রি করে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও তার পরিচিত মল্লিকাপুর গ্রামের এক ব্যক্তি স্ত্রীর চাকরির আশায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন। মোট ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা জেলা পরিষদের ওই সদস্যর এক ঘনিষ্ঠের হাতে দেওয়া হয় বলেও তাঁদের দাবি। ওই চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, চাকরির ব্যবস্থা তো দূরের কথা, ওই টাকা দিতে অস্বীকার করছেন মামণিদেবী। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, হাইকোর্টে মামলা হওয়ার জন্য ওই পদের চাকরির পরীক্ষা দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। তবে হাইকোর্টের রায়ে সেই পরীক্ষার জট কাটতে চলেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে রাসবিহারীবাবুর স্ত্রী, মেমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মৌসুমী মণ্ডলের নেতৃত্বে বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী মামণিদেবীর বাড়িতে যান। মামণীদেবীর বাড়ি দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়। মৌসুমীদেবীর অভিযোগ, জেলা পরিষদের সদস্য তো আমাদের চিনতেই পারলেন না। রাসবিহারীবাবুর অভিযোগ, “উনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। টাকা ফেরৎ দিতে হবে বলে চিনতেও পারছেন না!”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের সদস্যের বাড়ি ঘেরাও হয়েছে জানার পরে পুলিশ দেবুনিয়া গ্রামে যায়। সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সহ অন্যান্য ঘেরাওকারীদের বোঝানোর পরে তাঁরা গ্রাম ছেড়ে চলে যান। তবে জেলা পরিষদের সদস্য মামণিদেবীর দাবি, “চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।” মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের অমল বাগ বলেন, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। কিন্তু প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় বিষয়টির দিকে নজর দিতে পারিনি। তবে জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।” সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “লিখিত অভিযোগ এলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE