Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জামালপুরে মৃত যুবক, পুড়ল খামার

মঙ্গলবার রাতে ইসরাক মল্লিক (৩৮) নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয় গ্রামেরই একটি কুল বাগান লাগোয়া মুরগি খামারের ভিতরে।

মাঠনিসপুর গ্রামে পুড়ে ছাই মুরগির খামার। নিজস্ব চিত্র

মাঠনিসপুর গ্রামে পুড়ে ছাই মুরগির খামার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২১
Share: Save:

মুরগির খামার থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধারের পরে ধুন্ধুমার হল জামালপুরের মাঠনিসপুর গ্রামে। ওই ব্যক্তিকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে ক্ষিপ্ত জনতা মুরগির খামারটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মারধর করা হয় সেটির মালিকদের। তাঁদের মধ্যে এক জন বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গ্রামে পুলিশ পিকেট রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ইসরাক মল্লিক (৩৮) নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয় গ্রামেরই একটি কুল বাগান লাগোয়া মুরগি খামারের ভিতরে। তিনি সে দিন দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কৃষক পরিবারের ছেলে ইসরাকের দেহ উদ্ধারের কথা ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে অশান্তি তৈরি হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কুল বাগানের বেড়ায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রেখেছিলেন মুরগি খামারের মালিকেরা। তাতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইসরাকের মৃত্যু হয়েছে। তার পরে দেহ লোপাটের উদ্দেশ্যে মুরগির খামারে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। মৃতের কাকা ইসমাইল মল্লিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খুন ও দেহ লোপাটের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করেছে।

মৃতের স্ত্রী নয়নমনি বেগমের অভিযোগ, ‘‘আমার স্বামীকে বিদ্যুতের শক দিয়ে খুন করা হয়েছে। তার পরে দেহ লোপাটের চেষ্টা করা হয়। রাতে গ্রামবাসীদের চেষ্টায় মুরগি খামারের ভিতরে একটি চৌকির নীচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় দেহ উদ্ধার করা হয়।’’ মৃতের মা সাহানারা বেগম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ইসরাক স্ত্রীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার পরে মাঠে যাচ্ছেন জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন। আর ফেরেননি। মৃতের আত্মীয় শেখ মনিরুল হকের দাবি, সে দিন বিকেলে ওই খামারে সন্দেহজনক ভাবে কিছু লোকজনকে ঘুরতে দেখা যায়। তা দেখে সন্দেহ হওয়ায় মালিকদের জিজ্ঞাসা করা হলে, তাঁরা ইসরাকের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। রাতে খামারের ঘরের ভিতরে একটি মুখবন্ধ বস্তা দেখা যায়। সেটি খুলতেই ইসরাকের দেহ দেখা যায়।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতেই জনতা মুরগির খামারে আগুন লাগিয়ে দেয়। খামারের মালিক ইয়ামিন সামাদ মল্লিককে মারধর করে। আর এক মালিক আবু সামাদ মল্লিক-সহ বাড়ির অন্য সদস্যেরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গ্রামে পুলিশি টহল রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, চুরি আটকাতে বেআইনি ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে কুলের বাগানে বেড়া দিয়ে রেখেছিলেন খামারের মালিকেরা। তা আড়াল করতেই দেহ লোপাটের ছক কষা হয়েছিল। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘কুলের বাগানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হলে তা বেআইনি ভাবে করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Farmhouse Death Jamalpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE