Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

টাকা তছরুপ নিয়ে দ্বন্দ্বে শিক্ষক-পরিচালন সমিতি

টাকা তছরুপের অভিযোগকে কেন্দ্র করে পরিচালন সমিতি ও প্রধান শিক্ষকের পারস্পরিক চাপান উতোরে শিকেয় উঠেছে পড়াশোনা। প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনই অবস্থা বেনাচিতির ভারতীয় হিন্দি হাইস্কুলের। অবিলম্বে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৫ ০১:২৩
Share: Save:

টাকা তছরুপের অভিযোগকে কেন্দ্র করে পরিচালন সমিতি ও প্রধান শিক্ষকের পারস্পরিক চাপান উতোরে শিকেয় উঠেছে পড়াশোনা। প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনই অবস্থা বেনাচিতির ভারতীয় হিন্দি হাইস্কুলের। অবিলম্বে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশ।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ অগস্ট নতুন স্কুল পরিচালন সমিতির বৈঠক হয়। সেখানে প্রায় ১৯ লাখ টাকার গড়মিল ধরা পড়ে। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের তরফে জানানো হয়েছে, বৈঠকেই পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা প্রধান শিক্ষক ধর্মেন্দ্র প্রসাদ সিংহ ও পরিচালন সমিতির সভাপতি কল্যাণ গুপ্ত পরস্পরের উপর দোষারোপ শুরু করেন। স্কুলের সহ-শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যরাও কার্যত দু’ভাগ হয়ে যান বলে খবর। বৈঠকের খবর বাইরে আসতেই উত্তেজনা ছড়ায় স্কুলে।

এই পরিস্থিতিতে দিন কয়েক ধরে প্রধান শিক্ষক ধর্মেন্দ্রবাবু স্কুলে না আসায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলে অভিভাবকদের দাবি। পড়ুয়াদের একাংশ প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘স্কুল পরিচালন সমিতির নাম করে স্কুলের তহবিলের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে।’’ প্রধান শিক্ষককে অন্ধকারে রেখে কল্যাণবাবু বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ। ধর্মেন্দ্রবাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও বোরো কমিটির চেয়ারম্যান নিমাই গড়াইয়ের মদতে পরিচালন সমিতি স্কুল তহবিলের টাকা নয়ছয় করার চেষ্টা করছে। আমার কাছে টাকা চাওয়া হলেও রাজি হইনি। তাই আমাকে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে।’’ যদিও পরিচালন সমিতির সভাপতি কল্যাণবাবু পাল্টা দাবি করেন, ‘‘স্কুল তহবিল থেকে অনায্য ভাবে টাকা তুলেছেন প্রধান শিক্ষক। তহবিলের হাপিস হওয়া টাকার হিসেব চাইতেই প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। স্কুলের টাকা ব্যক্তিগত দরকারে কাজে লাগানো হয়েছে।’’ কাউন্সিলর নিমাইবাবুরও দাবি, ‘‘ধর্মেন্দ্রবাবু বিপাকে পড়ে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিচালন সমিতির এক সদস্য দাবি করেন, ‘‘তহবিল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ বেশ কয়েকজন সুদহীন ঋণ নিয়েছেন। এ ভাবে ঋণ নেওয়া যায় না।’’ যদিও প্রধান শিক্ষকের দাবি, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নয়, স্কুল ভবন তৈরির জন্যই টাকা নেওয়া হয়। সে অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি প্রধান শিক্ষকের। তবে স্কুলে না যাওয়ার বিষয়ে ধর্মেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতির বদল না হলে আমার পক্ষে স্কুলে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়।’’

অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশের তরফে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে পড়াশোনায় লাটে উঠেছে। ক্লাস থেকে শুরু করে স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজই আটকে রয়েছে বলে দাবি। উভয় পক্ষের তরফেই প্রশাসনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE