বাজেটে অর্থ অনুমোদন করা হয়েছে। তবু কাটোয়া থেকে বলগনা পর্যন্ত রেললাইনের গেজ বদলের কাজ কবে শুরু হবে, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি রেল কর্তৃপক্ষ।
রেল বাজেটের ‘পিঙ্ক বুক’ অনুযায়ী, কাটোয়া থেকে বলগনা২৮ কিলোমিটার রেলপথের গেজ বদলের প্রাথমিক পর্যায়ে মোদী সরকার প্রায় সাড়ে ৬২ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। ওই রেল পথের বাকি অংশ অর্থাৎ বর্ধমান থেকে বলগনা পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন হয়েছিল আগেই, মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন। এখন ওই পথ দিয়ে নিয়মিত চার জোড়া ট্রেন চলে। প্রসঙ্গত, রেলের সঙ্গে চুক্তি মেনে এ বছর ৩ মার্চ পূর্ব রেলের মুখ্য বাস্তুকারের (কনস্ট্রাকশন ২) হাতে এনটিপিসি দু’টি চেকে ১১২ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা তুলে দেয়। তারপরেই শিল্যান্যাসের সাত বছর পরে কাটোয়া থেকে বলগনা পর্যন্ত রেলপথকে বড় করে তুলতে টাকা দিল রেল দফতর। তবে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “ওই লাইনের ব্রডগেজ কাজ কবে থেকে শুরু হবে, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
কিন্তু বাজেটে টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরেও গেজ বদলের কাজ শুরু নিয়ে পূর্ব রেলের কর্তারা টালবাহানা করছেন কেন? রেল দফতরের একাধিক কর্তার দাবি, কাটোয়া-বলগনা রেলপথে মঙ্গলকোটের নিগন, কাটোয়ার শ্রীখণ্ড হল্ট স্টেশন, গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামের কাছে রেলের বেশ কিছু জমি দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে জবরদখল হয়ে রয়েছে। তা ছাড়া বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের গা ঘেঁষে যাওয়া রেললাইনের পাশে একাধিক জায়গায় ব্রডগেজ করার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। ফলে, জমি-জট দেখা যেতে পারে। সপ্তাহখানেক আগে এ নিয়ে পূর্ব রেলের বিবি লুপ নিত্যযাত্রী অ্যাসোসিয়েশন ডিআরএম (হাওড়া)-র সঙ্গে দেখা করে। ওই সমিতির সদস্য চঞ্চল পানের দাবি, কাটোয়া-বলগনা গেজ বদলের প্রসঙ্গে ডিআরএম জানান ওই রেলপথের বিভিন্ন জায়গা জবরদখল হয়ে রয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দখল উচ্ছেদের জন্য রেল চিঠি দিয়ে বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য চাইবে। তারপরে কাটোয়া-বলগনা লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল সেপ্টেম্বর না ডিসেম্বর কোন মাসে বন্ধ হবে তা জানা যাবে। দিনকয়েক আগে পূর্ব রেলের মুখ্য বাস্তুকার (কনস্ট্রাকশন) ওই রেলপথ পরিদর্শনও করে গিয়েছেন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আমাদের কাছে রেল কোনও সাহায্য চাইলে দেখব।” মঙ্গলকোটের সিপিএম বিধায়ক সাজাহান চৌধুরী বলেন, “এই রেলপথকে ব্রডগেজ করার জন্য বিধানসভায় সরব হয়েছি। বিগত রেলমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছি। রেল সাহায্য চাইলে অবশ্যই এগিয়ে যাব।”
বর্ধমান কাটোয়া ন্যারো গেজ লাইনে ট্রেন চলতে শুরু করে ১৯১৫ সালের ১ ডিসেম্বর। লন্ডনের ম্যাকলিওড রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি ওই রেলপথটি কিনে ম্যাকলিওড লাইট রেলওয়েজ নাম দিয়ে ছোট রেল চালায়। পরে ১৯৬৬ সালে ওই রেলপথটি অধিগ্রহণ করে ভারতীয় রেল। এক সময় ওই রেলপথ দিয়ে ৮-১০ জোড়া ট্রেন চলাচল করত। ৫৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে লাগত প্রায় তিন ঘণ্টা। পরে ট্র্যাক দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ট্রেনের গতি কমে যায়। এখন কাটোয়া-বলগনা ছোট লাইনে ২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy