সংস্কারের পরেও এই ভবনে কাজ শুরু হয়নি। —নিজস্ব চিত্র।
আদালতের পুরনো ভবনের চাপ কমাতে সংস্কার করা হয়েছিল অন্য একটি ভবন। তার পরে কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু, সমস্ত কাজকর্ম চলছে সেই অপরিসর পুরনো ভবনেই। তার ফলে এক দিকে যেমন আইনজীবী থেকে আদালতে কাজে আসা মানুষজনের সমস্যার সুরাহা হয়নি, অন্য দিকে নতুন ভবনটি ফের ভরে গিয়েছে আগাছায়। শীঘ্র সেখানে আদালতের কাজকর্ম স্থানান্তরের দাবি তুলেছেন আইনজীবীরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈদ্যুতিকরণের কাজ বাকি থাকায় নতুন ভবনে কাজ শুরু করা যায়নি।
সিটি সেন্টারে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে ভাড়া নেওয়া তিন তলা একটি বাড়ির একতলায় বেশ কম জায়গায় চলছে দুর্গাপুর আদালত। ঘরগুলি আকারে আদালতের উপযুক্ত নয় বলে অভিযোগ। আদালতে কাজকর্মে আসা মানুষজনের বসার জায়গা নেই। সামনে গাছতলায় বসে অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। আইনজীবীদের জন্য বরাদ্দ ঘরও সংকীর্ণ। সব আইনজীবী এক সঙ্গে বসার জায়গা পান না। অনেকেই বারান্দায় বসে কাজ করেন। সেরেস্তাও চালান সেখানে। আদালতের এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে হলে রীতিমতো গুঁতোগুঁতি করে ভিড় ঠেলে যেতে হয়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রায় এক দশক আগে বর্তমান আদালত থেকে কয়েকশো মিটার দূরে গড়া হয় নতুন একটি একতলা ভবন। কিন্তু সেই বাড়ি আদালত বসানোর জন্য উপযুক্ত নয় বলে অভিযোগ তোলেন আইনজীবীরা। ধীরে ধীরে পরিত্যক্তের চেহারা নেয় সেই বাড়িটি। ঝোপ-জঙ্গলে ভরে যায় চারপাশ।
মাস তিনেক আগে সেই একতলা ভবনটিই সংস্কারের উদ্যোগ হয়। বাড়িটি রং করা হয়। এজলাস তৈরি করা হয়। চত্বরে বড় বড় গাছ উঠে গিয়েছিল। সেগুলি কেটে, আগাছা পরিষ্কার করে সাফসুতরো করা হয়। পুরনো এবং নতুন আদালত ভবনের মধ্যে যাতে যোগাযোগ সহজ করা যায় সে জন্য এক দিকের সীমানা পাঁচিল কেটে বড় গেট বসানো হয়। আইনজীবীদের একাংশ আদালতে নিজের-নিজের সেরেস্তার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করার কাজও শুরু করে দেন। কিন্তু, সেই নতুন ভবনে আদালত এখনও চালু হয়নি।
দুর্গাপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অনুপম মুখোপাধ্যায় জানান, আদালতে কাজের চাপ আগের থেকে অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি আদালতের পরিসর আরও বাড়ানোর অনুমোদন মিলেছে। এখন আদালত চলছে সংকীর্ণ জায়গায়। আবার যে নতুন ভবন গড়া হয়েছিল তা-ও যথেষ্ট নয়। বড় আদালত ভবন গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সভাপতি দেবব্রত সাঁই বলেন, “আদালতের জন্য উপযুক্ত ভবন দরকার। দুর্গাপুরে তা নেই। নতুন ভবন তৈরি হলে তবেই সমস্যা মিটবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ভবন গড়ে তোলার কোনও আশু সম্ভাবনা নেই। সমস্যা সমাধানে পুরনো জায়গা থেকে একাধিক এজলাস নতুন ভবনে তুলে নিয়ে গিয়ে আপাতত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে।
কিন্তু সংস্কারের পরেও নতুন ভবনে আদালত চালু হচ্ছে না কেন? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি সংস্কারের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল, তা শেষ হয়ে গিয়েছে। বাড়িটির বৈদ্যুতিকরণের কাজ বাকি আছে। সে জন্য আরও অর্থ দরকার। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের অর্থ মন্ত্রক সে জন্য অর্থ অনুমোদন করেছে বলে জানান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অনুপমবাবু। দ্রুত এই কাজ সেরে ফেলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy