Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পরিকল্পনা সার, সেতু ভাঙাই পড়ে সিঙ্গারনে

জাতীয় সড়ক এড়িয়ে অন্ডালের পাঁচটি পঞ্চায়েতের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তুলতে সেতু গড়া হয়েছিল এক দশকেরও বেশি আগে। সিঙ্গারন নদীর জলের তোড়ে বারবার ভেঙে গিয়েছে সেই সেতু। ঠিক ভাবে আর তা গড়ে তোলা হয়নি। তাই সহজে যাতায়াতের স্বপ্ন অধরাই ওই পাঁচ গ্রামের। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে দু’নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরি হয়। জাতীয় সড়কের দক্ষিণ দিকে দামোদর লাগোয়া চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতমদনপুর, রামপ্রসাদপুর, শ্রীরামপুর ও অন্ডাল।

অন্ডালের সেই সেতু। —নিজস্ব চিত্র।

অন্ডালের সেই সেতু। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অন্ডাল শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০১:২৬
Share: Save:

জাতীয় সড়ক এড়িয়ে অন্ডালের পাঁচটি পঞ্চায়েতের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তুলতে সেতু গড়া হয়েছিল এক দশকেরও বেশি আগে। সিঙ্গারন নদীর জলের তোড়ে বারবার ভেঙে গিয়েছে সেই সেতু। ঠিক ভাবে আর তা গড়ে তোলা হয়নি। তাই সহজে যাতায়াতের স্বপ্ন অধরাই ওই পাঁচ গ্রামের।

অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে দু’নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরি হয়। জাতীয় সড়কের দক্ষিণ দিকে দামোদর লাগোয়া চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতমদনপুর, রামপ্রসাদপুর, শ্রীরামপুর ও অন্ডাল। উত্তর-পশ্চিমে কাজোড়া। বাসিন্দারা জানান, জাতীয় সড়কের পাশে কোনও সার্ভিস রোড নেই। সাইকেল বা পায়ে হেঁটে যেতে গেলেও এই সড়ক ব্যবহার করতে বাধ্য হন এলাকাবাসী। এ দিকে অন্ডালের কাজোড়া-সহ পাঁচটি পঞ্চায়েতের সঙ্গে জাতীয় সড়কের ঝুঁকি এড়িয়ে একটি বিকল্প রাস্তার চাহিদা ছিলই। তারকডাঙার কাছে সিঙ্গারন নদীর উপরে একটি সেতু তৈরি করে সেই রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতি। এটি পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুর হয়ে বীরভূম যাওয়ার স্বল্প দৈর্ঘ্যের রাস্তা হিসেবেও পরিচিত।

পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে জেলা পরিষদের সহয়তায় ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে সেতু নির্মাণ হয়। সমিতির তৎকালীন সভাপতি তথা সিপিএম নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, জেলা পরিষদের কাছে তাঁরা বিকল্প রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই রাস্তা হয়নি। তবে রাস্তার মাঝে সিঙ্গারন নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারের নকশার উপরে ভিত্তি করে। অভিযোগ, সেই নকশা আদতে ভুল ছিল। এর জেরে সেতুর দু’পাশের সংযোগকারী রাস্তা ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিন বার জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। এর কারণ, ওই সেতুর নীচে ১৪টি হিউমপাইপ বসানো হয়েছে। কিন্তু ওই পাইপের মুখ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক ছোট। যার জেরে বর্ষায় নদীর জলে ভেসে আসা আর্বজনার সঙ্গে গাছের ডালপালা সেখানে আটকে যায়। এখন সেতুর কাছে গেলে দেখা যায়, ভরা গ্রীষ্মে নদীর জল শুকিয়ে গিয়েছে। সাইকেল, মোটরবাইকের মতো দু’চাকা ও ঠেলা-ভ্যানের মতো গাড়ি নিয়ে নদীর উপর দিয়ে এলাকাবাসী যাতায়াত করছেন।

সোমনাথবাবুর দাবি, দু’বার তাঁদের দখলে থাকা পঞ্চায়েত সমিতি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে সংস্কার করেছে। ২০১০ সালের পরে এডিডিএ-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের বিদায়ী সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী ওই সেতুটি বাদ দিয়ে নতুন করে একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। চার কোটি টাকা এডিডিএ অনুমোদনও করেছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরে আর এ নিয়ে কোনও উদ্যোগ হয়নি বলে অভিযোগ। সোমনাথবাবুর বক্তব্য, “আবার ভোটের আগে এই সেতু তৈরি নিয়ে শাসক দল প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বলে শুনছি। দেখা যাক, কবে কাজ শুরু হয়।”

বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “পুরনো সেতু সারলেও কোনও সমাধান হবে না। নতুন সেতু তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। লোকসভা ভোটের পরে কাজ শুরু হবে।” এলাকাবাসী অবশ্য বলছেন, না আঁচালে বিশ্বাস নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bridge singaran andal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE