বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা চালুর প্রতিবাদে দু’দিন উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন খনির কর্মীরা। দুর্গাপুরের ঝাঁঝরা কোলিয়ারিতে এই অচলাবস্থার জেরে ইতিমধ্যেই প্রায় এক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানাল ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল)।
সংস্থা সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ওই খনিতে দৈনিক গড় উৎপাদন প্রায় সাড়ে চার হাজার টন কয়লা। প্রায় আঠেরোশো শ্রমিক-কর্মী কাজ করেন। মঙ্গলবার সেখানে খাতায় সইয়ের পরিবর্তে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা চালু হয়। এই পদ্ধতিতে শ্রমিক-কর্মীরা কখন এলেন ও কাজ সেরে বেরোলেন, তা ছবি-সহ কম্পিউটারে নথিবদ্ধ হয়ে যাবে। এই পদ্ধতি চালু হতেই অশান্তি শুরু হয়।
খনি সূত্রে জানা যায়, কোলিয়ারির সব ক’টি শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ দাবি করে, তাদের আগে থেকে না জানিয়ে এই হাজিরা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে ওই কমিটির নেতৃত্বে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বুধবারও বিক্ষোভ চলে।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “বায়োমেট্রিক পদ্ধতি যে চালু করা হবে, তা ২০১৩ সালে সব শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক হয়েছিল। এখন কেন বিরোধিতা করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না।” ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, সংস্থার লাভজনক খনিগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। তাই শ্রমিক-বিক্ষোভ প্রত্যাহারের ব্যাপারে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে পদক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
এক খনিকর্তার দাবি, শ্রমিক-কর্মীদের একাংশ নিয়মিত কাজে না এলেও বা দেরিতে যোগ দিলেও ঠিক সময়ে তাঁদের হাজিরা পড়ে যায়। সম্প্রতি রানিগঞ্জের জেকে নগর খনিতে এই হাজিরা নিয়েই এক আইএনটিটিইউসি নেতার সঙ্গে খনিকর্তার ঝামেলার জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হলে হাজিরা নিয়ে কোনও দুর্নীতি চলবে না বলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ ওই আধিকারিকের।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের সম্পাদক হরেরাম সিংহ অবশ্য বলেন, “কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।” সিটু নেতা বিবেক চৌধুরী এবং আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “শ্রমিক-কর্মীদের বুঝিয়ে বিক্ষোভ থামানোর ব্যবস্থা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy