টাউন হল থেকে বেরিয়ে জিটি রোড ধরে কংগ্রেসের পদযাত্রা। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের নানা ওয়ার্ডে নির্বাচনী সরঞ্জাম না পৌঁছনোয় দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী প্রদীপ অগস্তি।
বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে প্রদীপবাবুর সমর্থনে বর্ধমান টাউন হল থেকে পদযাত্রায় আয়োজন করে কংগ্রেস। সকাল ৯টায় মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ছন্নছাড়া মিছিল নিয়ে বের হন প্রদীপ অগস্তি। মিছিল কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরে মাইক লাগানো ম্যাটাডর ভ্যানে যোগ দিতে দেখা যায় কর্মীদের একাংশকে। এমনকী জেলা কংগ্রেস গ্রামীণের সভাপতি আভাস ভট্টাচার্য বারণ করলেও ওই কর্মীরা তা শোনেননি বলে অভিযোগ। কর্মীদের দাবি, এত রোদে কী হাঁটা যায়। অনেকে নেতাদের বলে বাড়িও ফিরে যান। ফলে গোটা পঞ্চাশেক লোক নিয়েই মিছিল করেন প্রদীপবাবু। কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও জেলা গ্রামীণ কংগ্রেসের সভাপতি আভাস ভট্টাচার্য বলেন, “যা হয়েছে এই যথেষ্ট।”
মিছিল শুরুর আগে টাউনহলেই শহরের নানা ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার সংক্রান্ত সরঞ্জাম না পৌঁছনোয় বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ। এমনকী প্রদীপ অগস্তির পাঞ্জাবি ধরে টানাটানির উপক্রম হয়ে বলেও জানা গিয়েছে। কর্মীরা দাবি তোলেন, “এআইসিসি ইতিমধ্যে আপনাকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছে। তবুও আপনি আমাদের প্রচারের সরঞ্জাম দিচ্ছেন না। সব টাকা কোথায় যাচ্ছে? এমনিতেই তো নামতে দেরি হয়েছে, তার উপরে এখনও হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হলে চলবে কী করে?” বিক্ষোভের জেরে একসময় প্রদীপবাবুকে টাউনহলের এক কোণে আশ্রয় নিতে হয়। তবে এআইসিসি তাঁকে কত টাকা দিয়েছে, তা তিনি বলতে চাননি। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে, রোদে হেঁটে অসুস্থ হয়ে পড়েন কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ অগস্তি। ফলে পদযাত্রার পরে তাঁর দেখা পাননি কর্মীরা। অনেক কর্মীই ক্ষোভের মুখে অভিযোগ করেন, ভোটে নেমে প্রার্থী এমন করে পালিয়ে গেলে কী করে সামান্য লড়াইটুকু দেব আমরা? তাঁদের দাবি, আত্মসমর্পণের ইচ্ছেই যদি ছিল, তাহলে প্রার্থী দাঁড় না করালেই হত। জেলা কংগ্রেসের এক বিশিষ্ট নেতাও বলেন, “আসলে প্রদীপবাবু নিজের হাতে সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। সংগঠনের পুরনো কর্মীদের সেভাবে পাত্তা দিচ্ছেন না। তাতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে।”
এ দিন পদযাত্রার ফাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “গোয়েন্দা সংস্থা সিট রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন। তার পক্ষে সরকারের মন্ত্রী বা শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেলেও তদন্ত করা সম্ভব নয়। তাই এই তদন্তকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার সারদা কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে চাইছে।” তদন্তে ইডিকে নামাতে দেরি হয়েছে বলেও আক্ষেপ করেন প্রদীপবাবু। তাঁর অভিযোগ, “একটি প্রতারক সংস্থার মালিক মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছেন। এটাই কী সন্দেহ করার পক্ষে উপযুক্ত নয়? তাছাড়া বিধাননগর কমিশনারেট এতদিন চুপচাপ থেকে আচমকা গভীর রাতে জেগে উঠে লকারের দখল নিতে গেল! এটাও তো সন্দেহ হওয়ার মতো ঘটনা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy