Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
আনন্দবাজারের খবরের জের

ভুল মেনে নিয়ে তিন শিক্ষকের শাস্তি প্রত্যাহার

সাধারণ শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের চাপ ছিল। শেষ পর্যন্ত সাসপেন্ড হওয়া তিন শিক্ষকের শাস্তি ফিরিয়ে নিল গঙ্গাটিকুরী অতীন্দ্রনাথ বিদ্যামন্দিরের পরিচালন সমিতি। ওই শিক্ষকদের সাসপেন্ড করা যে ঠিক হয়নি, তা-ও কর্তারা মেনে নিয়েছেন। শনিবার বর্ধমানের কেতুগ্রামে ওই স্কুলের তৃণমূল পরিচালিত পরিচালন সমিতি বৈঠকে বসে। পরে সমিতির সম্পাদক সুনীলকুমার মুখোপাধ্যায় তিন শিক্ষককে চিঠি দিয়ে (মেমো নং ৪০/এস/২০১৪) কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। সাময়িক বরখাস্তের নোটিস থাকায় শুক্র ও শনিবার তাঁরা হাজিরা খাতায় সই করতে পারেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১৭
Share: Save:

সাধারণ শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের চাপ ছিল। শেষ পর্যন্ত সাসপেন্ড হওয়া তিন শিক্ষকের শাস্তি ফিরিয়ে নিল গঙ্গাটিকুরী অতীন্দ্রনাথ বিদ্যামন্দিরের পরিচালন সমিতি। ওই শিক্ষকদের সাসপেন্ড করা যে ঠিক হয়নি, তা-ও কর্তারা মেনে নিয়েছেন।

শনিবার বর্ধমানের কেতুগ্রামে ওই স্কুলের তৃণমূল পরিচালিত পরিচালন সমিতি বৈঠকে বসে। পরে সমিতির সম্পাদক সুনীলকুমার মুখোপাধ্যায় তিন শিক্ষককে চিঠি দিয়ে (মেমো নং ৪০/এস/২০১৪) কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। সাময়িক বরখাস্তের নোটিস থাকায় শুক্র ও শনিবার তাঁরা হাজিরা খাতায় সই করতে পারেননি। এই দু’দিন তাঁদের সবেতন বিশেষ ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কেতুগ্রামের ওই স্কুলের স্টাফরুমে দু’দল শিক্ষকের বসার জায়গা নিয়ে ক’দিন ধরে কাজিয়া চলছিল। কিন্তু তৃণমূলের কেতুগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেবাশিস মণ্ডল মীমাংসা করতে এলে কিছু শিক্ষক তা মানতে চাননি। ব্লকের স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) কুন্তল দত্তও নেতার সঙ্গে ছিলেন। দু’দিনের মধ্যে পরিচালন সমিতির বৈঠক বসিয়ে সামশের মুর্শিদ, মানিক বিশ্বাস ও পরিমল বৈদ্য নামে তিন শিক্ষককে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। যদিও কেন এই শাস্তি, চিঠিতে তার কারণ জানানো হয়নি। সরকারি নিয়মও যথাযথ ভাবে মানা হয়নি।

খবরটি জানাজানি হতেই স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ ক্লাস বয়কট করেন। প্রধান শিক্ষকের বাড়ি ও কুন্তলবাবুর দফতরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। শুক্রবার স্কুলে গিয়েও অধিকাংশ শিক্ষক হাজিরা খাতায় সই করেননি। তিন শিক্ষকই তৃণমূল নেতা ও স্কুল পরিদর্শকের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু পরিমলবাবু বাদে বাকি দু’জন নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে রাজি হননি। বরং আনন্দবাজার পত্রিকাকে তাঁরা জানিয়ে দেন, ‘অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে’ পরিচালন সমিতির কাছে ক্ষমা চাইবেন না। তার পরেই চাকা ঘুরে যায়।

সাময়িক বরখাস্তের শাস্তি ফিরিয়ে পরিচালন সমিতি কি কার্যত নিজেদের অন্যায় মেনে নিল না?

সুনীলবাবু বলেন, “অন্যায় যে হয়েছিল, তা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কী?” প্রথম থেকেই যিনি স্কুলে তৃণমূল নেতার হস্তক্ষেপ সমর্থন করেছেন, সেই প্রধান শিক্ষক তড়িৎকুমার চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “ন্যায়-অন্যায়ের ব্যাপার নয়। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ওই শিক্ষকদের ভয় দেখানো, যাতে তাঁরা পরিচালন সমিতিকে মান্য করে চলেন।”

দেবাশিসবাবুর দাবি, “এ ব্যাপারে আমার কোনও ভূমিকা নেই। যা করার স্কুলের পরিচালন সমিতিই করেছে।” তৃণমূলের স্থানীয় নেতা শ্যামল মুখোপাধ্যায় অবশ্য মেনে নিয়েছেন, “বিভিন্ন জায়গা থেকে তিন শিক্ষকের উপর থেকে সাময়িক বরখাস্ত তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ আসছিল। সেই মতো আলোচনার ভিত্তিতে পরিচালন সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE