Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মেরুন ব্যাগ খুলতেই বেরোল দেহের টুকরো

ভুটভুটি থেকে চারটি ব্যাগ ফেলার পরে ঘাটে নেমেই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সমরেশ সরকার। দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী ও তাঁর চার বছরের মেয়ের হত্যা-মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন বুধবার শ্রীরামপুর আদালতে দাঁড়িয়ে বিচারককে সে কথাই জানালেন ওই ভুটভুটির মাঝি মুকুন্দ মান্না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:৩১
Share: Save:

ভুটভুটি থেকে চারটি ব্যাগ ফেলার পরে ঘাটে নেমেই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সমরেশ সরকার। দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী ও তাঁর চার বছরের মেয়ের হত্যা-মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন বুধবার শ্রীরামপুর আদালতে দাঁড়িয়ে বিচারককে সে কথাই জানালেন ওই ভুটভুটির মাঝি মুকুন্দ মান্না।

নিজের প্রেমিকা সুচেতা ও তাঁর মেয়ে দীপাঞ্জনাকে খুনের পরে সুচেতার দেহ টুকরো করে তিনটি করে ব্যাগে ভরে এবং অন্য একটি ব্যাগে তাঁর মেয়ের দেহ ভরে দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার (এখন সাসপেন্ডেড) সমরেশ ব্যারাকপুর থেকে শেওড়াফুলির মাঝে যাত্রীবোঝাই ভুটভুটি থেকে গঙ্গায় ফেলে দেন বলে অভিযোগ। সেই মামলারই শুনানি শুরু হয়েছে শ্রীরামপুর আদালতে।

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন মুকুন্দবাবু সমরেশকে সনাক্ত করেছিলেন। এ দিন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ঘটনার দিন ব্যারাকপুর থেকে শেওড়াফুলির মাঝে সমরেশ ৪টি ব্যাগ গঙ্গায় ফেলে দেন। এর পর শেওড়াফুলি ঘাটে ভুটভুটি থেকে নামতেই যাত্রীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। তখন সমরেশ জানান, তিনি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। অপ্রয়োজনীয় কিছু কাগজ ব্যাগে ভরে গঙ্গায় ফেলেছে‌ন। সন্দেহ হওয়ায় লোকজন অবশ্য তাঁকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে সমরেশকে নিয়ে যায়।

মুকুন্দবাবু আরও জানান, ওই ঘটনার এক ঘণ্টা পরে তিনি খবর পান, শ্রীরামপুরের ধোবি ঘাটের কাছে একটি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের অনুরোধে তিনি শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে যান। সেখানে মেরুন রঙের ব্যাগ দেখে তিনি চিনতে পারেন ওই ব্যাগটিই সমরেশ ভুটভুটি থেকে ফেলেছিল। ফাঁড়িতে ব্যাগ খুলতে দেখা যায়, বিছানার চাদর জড়ানো অবস্থায় নাভির উপর থেকে পা পর্যন্ত এক মহিলার দেহাংশ।

সরকারি আইনজীবী এ দিন একটি মেরুন রঙের ট্রলিব্যাগের ছবি এবং এক মহিলার দেহাংশের ছবি দেখিয়ে মুকুন্দবাবুর কাছে জানতে চা‌ন, তিনি যে ব্যাগ এবং মহিলার দেহাংশের কথা বলছেন, ছবিগুলি সেগুলিই কি না। ছবি দেখেই মুকুন্দবাবু বলেন, ‘‘হ্যাঁ। এগুলি ওই ব্যাগ এবং মহিলার দেহাংশের ছবি।’’

মুকুন্দবাবুর ওই বক্তব্যের পরে জয়দীপবাবু বিচারককে জানান, আজ বৃহস্পতিবার তাঁর মাঝিকে প্রশ্ন শেষ হবে। বিচারক (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক) রাজা চট্টোপাধ্যায় তখন আসামী পক্ষের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, বৃহস্পতিবার তাঁরা মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কি না।

আসামীপক্ষের আইনজীবী জানান, চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে ‘রিভিশন পিটিশন’ দাখিল করা হয়েছে। তার নিষ্পত্তি না হওয়ায় তাঁদের পক্ষে এখনই সাক্ষীদের প্রশ্ন করা সম্ভব নয় বলে আইনজীবীর দাবি। বিচারক জানিয়ে দেন, হাইকোর্ট ওই পিটিশনের ব্যাপারে কোনও স্থগিতাদেশ দেননি। তাই নির্দিষ্ট নিয়মেই মামলা চলবে।

রানিগঞ্জে অপমৃত্যু। অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক মহিলার। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম শ্যামলী মণ্ডল (৫৭)। তাঁর বাড়ি রানিগঞ্জের রনাইয়ে। মৃতার স্বামী প্রভাকর মণ্ডলের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় শ্যামলীদেবী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন। পরে রানিগঞ্জ থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE