Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা আটকাল তৃণমূল, সামিল বহিষ্কৃত নেতাও

শীর্ষ নেতৃত্বের বার্তাই সার। মদন মিত্রকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ফের জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সামিল হলেন দল থেকে বহিষ্কৃত নেতাও। রবিবার দুর্গাপুরের মুচিপাড়া মোড়ে এই বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছুক্ষণ যানজট তৈরি হয়। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরেই শাসকদলের উচ্চ নেতৃত্ব কর্মীদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, এর প্রতিবাদ করতে হবে ঠিকই, কিন্তু তা যেন সাধারণ মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি না করে। তার পরেও দুর্গাপুরে প্রতি দিনই জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ-মিছিল চলছে।

মুচিপাড়ায় মিছিলে বহিষ্কৃত নেতা খোকন রুইদাস (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

মুচিপাড়ায় মিছিলে বহিষ্কৃত নেতা খোকন রুইদাস (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:১৭
Share: Save:

শীর্ষ নেতৃত্বের বার্তাই সার। মদন মিত্রকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ফের জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সামিল হলেন দল থেকে বহিষ্কৃত নেতাও। রবিবার দুর্গাপুরের মুচিপাড়া মোড়ে এই বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছুক্ষণ যানজট তৈরি হয়।

রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরেই শাসকদলের উচ্চ নেতৃত্ব কর্মীদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, এর প্রতিবাদ করতে হবে ঠিকই, কিন্তু তা যেন সাধারণ মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি না করে। তার পরেও দুর্গাপুরে প্রতি দিনই জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ-মিছিল চলছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারের কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা ছিলেন দলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তথা সুনীলবাবুর স্ত্রী শেফালিদেবীও। তৃণমূলের কর্মীদের পাশাপাশি হাজির হন মুচিপাড়া আইটিআই-এর বেশ কিছু টিএমসিপি সমর্থক। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মিছিল করে সবাই ২ নম্বর জাতীয় সড়কে পৌঁছন। সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়। দু’দিকে আটকে পড়ে শত-শত গাড়ি। আধ ঘণ্টা পরে বিক্ষোভ থামলেও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। সুনীলবাবু অবশ্য জাতীয় সড়ক অবরোধের কথা মানতে চাননি। তিনি বলেন, “দলের নির্দেশ মতো কারও যাতে অসুবিধা না হয় তা মাথায় রেখে শুধু মিছিল করা হয়েছে।”

এ দিন তৃণমূলের এই মিছিলের সামনের সারিতে ব্লক সভাপতি সুনীলবাবুর পাশেই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা খোকন রুইদাসকে। গত ৩ জুলাই স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়ে দলের তত্‌কালীন ২৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি খোকনবাবুর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানো ও তোলাবাজির অভিযোগ জানান। তখন দল খোকনবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলেও একটি প্রতারণার অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হওয়ার পরে অক্টোবরে তাঁকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করে তৃণমূল। দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন ব্লক সভাপতি সুনীলবাবুই। তবে তার পরেও অবশ্য দিন কয়েক আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্গাপুরের কর্মিসভায় দেখা গিয়েছিল খোকনবাবুকে।

বহিষ্কৃত হয়েও দলের কর্মসূচিতে গেলেন কেন? খোকনবাবু দাবি করেন, “ব্লক সভাপতি আমায় ডেকেছিলেন। তাই গিয়েছিলাম।” সুনীলবাবু অবশ্য বলেন, “ওঁকে নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাই তাঁকে ডাকার প্রশ্নই নেই। কেন এসেছিলেন জানি না।”

এ দিন ফের জাতীয় সড়কে তৃণমূলের বিক্ষোভে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। এ ভাবে রাস্তা আটকে দেওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়ে যাচ্ছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নিত্যযাত্রী বলেন, “মন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করবে আদালত। এ ভাবে মানুষকে বিপদে ফেলে তৃণমূলের কী স্বার্থসিদ্ধি হচ্ছে তা ওরাই জানে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE