Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সভায় সিপিএমের কায়দায় ভোট করার ডাক মদনের

কিছুদিন আগে পুলিশের পাহারায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ পড়ে থাকা সিপিএম কার্যালয় খুলল কান্দরায়। তিন বছর পরে কেতুগ্রাম ১ ব্লকে প্রকাশ্যে প্রচারে বেরোল সিপিএম। সেই কেতুগ্রামেই সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ করে সভা করলেন তৃণমূলের মন্ত্রী মদন মিত্র।

মঞ্চে মদন মিত্র ও অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে মদন মিত্র ও অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৪
Share: Save:

কিছুদিন আগে পুলিশের পাহারায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ পড়ে থাকা সিপিএম কার্যালয় খুলল কান্দরায়। তিন বছর পরে কেতুগ্রাম ১ ব্লকে প্রকাশ্যে প্রচারে বেরোল সিপিএম। সেই কেতুগ্রামেই সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ করে সভা করলেন তৃণমূলের মন্ত্রী মদন মিত্র।

রবিবার বিকেলে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে কেতুগ্রাম হাই স্কুল মাঠে মদন মিত্র স্পষ্ট বললেন, “সমঝদারকে লিয়ে ইশারায় কাফি। ৩৪ বছরে সিপিএম যে কায়দায় ভোট করত ঠিক সেই ভোট।” পরক্ষণেই যোগ করলেন “এটা শুনেই নির্বাচন কমিশন বলবে মদন মিত্র ভোট লুঠ করতে বলেছে। তাহলে কী সিপিএম ভোট লুঠ করেছিল? তখন কী করছিলেন? রামচন্দ্র ডোমের কোমরে দড়ি পরান নি কেন?”

দুপুর ৩টেয় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে এলেন মদন মিত্র। মঞ্চে ওঠার পরেই বিরক্ত, অধ্যৈর্য কর্মীদের দেখে হাত জোড় করে অনুব্রত মণ্ডল বললেন, “আপনারা অনেকক্ষণ এসেছেন। ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙেছে।” ততক্ষণে অনেকেই সভা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তারপর বোলপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অনুপম হাজরাকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।

মদনবাবুর অভিযোগ, “তিন বছর আগে কেতুগ্রামে মিটিং হলে দুপুরের মধ্যে মিটিং শেষ করতে হত। সন্ধ্যে গড়ালেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিপিএম কর্মী সমর্থকেরা হামলা চালাত। ২০১০ সালে যে দিন বর্ধমানের দায়িত্ব নিই, সে দিনই জেলায় ১৯টি পার্টি অফিস পুড়ে গিয়েছিল। ওই অবস্থা থেকে আমরা লড়াই করে সুখের দিন নিয়ে এসেছি।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেত্রী বদলা চাই না বদল চাই, শ্লোগান না দিলে পাঁচ মিনিটে রাজ্য থেকে ফাঁকা হয়ে যেত। আমরা করতাম না মানুষ করত।” পরক্ষণেই যোগ করেন, “যে কোনও বক্তব্যের পিছনে মানুষ লাগিয়ে দিন, তাহলেই দেখবেন খালাস পেয়ে গিয়েছেন।” নির্বাচন কমিশনও পরোক্ষ আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “কোনও কমিশনকে পরোয়া করি না। নির্বাচন কমিশন আগে পিছে পুলিশের গাড়ি পাচ্ছে, নিরাপত্তা পাচ্ছে তাহলে মন্ত্রীরা পাবে না কেন?” তাঁর দাবি, “জেতার পরে বিরোধীদের অফিসে যাব, তবে মারতে নয় পাহারা দিতে।”

গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ১২টি গ্রামে পা পড়েনি সিপিএমের। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কেতুগ্রাম ১ ব্লকে সিপিএম কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিলেও বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি সিপিএম। কেতুগ্রাম ১ ব্লকে সিপিএমের উত্তর ও দক্ষিণ লোকাল কমিটির দু’টি দফতরই তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কেতুগ্রাম ২ ব্লকে সিপিএম অবশ্য অনেকটাই মজবুত। সিপিএমের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে গণনার সময়ে ব্যলট লুঠ করে পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছে তৃণমূল। এই ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বেশ কয়েকটি সিপিএমের দখলে।

কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহনেওয়াজ এ দিন বলেন, “সিপিএম নির্বাচনী এজেন্ট না দিতে পারলে আমরা কী করব। আমরা কোনও জবরদস্তি করব না। আমরা চাই সবাই এজেন্ট দিক।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অচিন্ত্য মল্লিক পাল্টা বলেন, “নির্বাচনে নিশ্চিত হার জেনেই কর্মী সমর্থকদের উত্‌সাহ দিতে তৃণমূল সভায় উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছে। এছাড়া ওদের কিছু করার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ketugram election campaign madan mitra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE