Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সংরক্ষণের তালিকায় পক্ষপাতের অভিযোগ

সপ্তাহ খানেক আগেই আসানসোল কর্পোরেশনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বৈঠক বয়কট করেছিল বিরোধীরা। শুক্রবার কর্পোরেশনের ১০৬টি ওয়ার্ডের জন্য চূড়ান্ত সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশের পরেও বিরোধীরা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুললেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৫ ০১:২৪
Share: Save:

সপ্তাহ খানেক আগেই আসানসোল কর্পোরেশনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বৈঠক বয়কট করেছিল বিরোধীরা। শুক্রবার কর্পোরেশনের ১০৬টি ওয়ার্ডের জন্য চূড়ান্ত সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশের পরেও বিরোধীরা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুললেন।

এ দিন দুপুরে মহকুমা প্রশাসনের তরফে প্রকাশিত তালিকা থেকে জানা যায়, তফসিলি জাতির জন্য ১৮টি ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়েছে। তার মধ্যে আবার ৭টি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। একটি মহিলা-সহ মোট ৪টি ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়েছে তফসিলি উপজাতিদের জন্য। সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ২৮টি।

আসানসোল কর্পোরেশনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয় গত ১০ অগস্ট। ওই দিন পুনর্বিন্যাস তালিকার বিরোধিতা করে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি। বিরোধী নেতার অভিযোগ করেন, শাসক দলের সুবিধেমতো তালিকা তৈরি হয়েছে। ওই দিন শেষমেশ প্রশাসনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকের মধ্যেই বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা তালিকা ছিঁড়ে স্লোগান দিতে-দিতে বেরিয়ে যান। রানিগঞ্জ, কুলটি ও জামুড়িয়া পুর এলাকাকে আসানসোলের সঙ্গে জুড়ে নতুন এই কর্পোরেশন তৈরি হয়েছে। ১০৬টি ওয়ার্ডের চূড়ান্ত সীমানা পুনর্বিন্যাস করে নির্বাচন কমিশন। মহকুমা প্রশাসনের তরফে সে দিন বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়, সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেই পুনর্বিন্যাসের তালিকা তৈরি হয়। পুনর্বিন্যাসের তালিকা চূড়ান্ত হলেও মহকুমা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া তালিকা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে ২৫ অগস্ট তার শুনানি হবে। তারপর এ দিন চূড়ান্ত সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ করা হয়। যদিও তালিকা প্রকাশের দিনে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়নি প্রশাসনের তরফে। তবে জেলাশাসকের স্বাক্ষর করা সংরক্ষণ তালিকার প্রতিলিপি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনসাধারণের জন্য তালিকার প্রতিলিপি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে মহকুমাশাসকের দফতরেও।

এ দিন সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশের পর বিরোধীরা ফের বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সংরক্ষণের এই তালিকা শাসক দলকে সুবিধে করে দিতেই তৈরি হয়েছে। সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সীমানা পুনর্বিন্যাসের তালিকা প্রকাশের দিনেই প্রশাসন কতটা একপেশে দেখা গিয়েছিল। এ দিনের তালিকা প্রকাশের পরেও সেই ধারাই বজায় রয়েছে দেখা গেল।’’ কংগ্রেসের মহকুমা কমিটির সভাপতি তথা বিদায়ী মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘বেছে বেছে শুধুমাত্র বিরোধী নেতাদের ওয়ার্ডগুলিকেই সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। বিরোধীদের কোনও আপত্তি শোনা হয়নি।’’ বিজেপি-র আসানসোল জেলা সম্পাদক তাপস রায়েরও বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের কাজ শাসক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। আমাদের কোনও কথারই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’’ এই পরিস্থিতিতে সবকটি বিরোধী দলই রাস্তায় নেমে আন্দোলনের কথা বলছে। যদিও সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে খুশি তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পায়ের তলায় মাটি নেই বুঝেই বিরোধীরা এমন অভিযোগ করছে।’’

যদিও আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস এ দিন বলেন, ‘‘সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির মতামত নিয়েই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশমতো এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।’’ উল্লেখ্য নব গঠিত আসানসোল কর্পোরেশনে ভোট হবে ৩ অক্টোবর। প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ৩ সেপ্টম্বর থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল শুরু হতে পারে। মনোনয়ন তোলার শেষ দিন ১৪ সেপ্টেম্বর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE