পড়ে পাম্প ঘর। —নিজস্ব চিত্র।
নদী সেচ প্রকল্পের (আরএলআই) আওতায় তৈরি পাম্প ঘরটি বছর পাঁচেক ধরে বেহাল পড়ে থাকলেও বারবার আবেদন করেও সংস্কার হয় নি বলে অভিযোগ করলেন দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের মৌকোটা গ্রামের বাসিন্দারা। এর জেরে চাষের কাজে অসুবিধা হচ্ছে বলে তাঁরা জানান।
মৌকোটা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এলাকায় সেচের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কুনুর নদীর ধারে ওই সেচ প্রকল্পটি তৈরি করা হয়। প্রকল্পের পাম্প ঘরটিও নদীর পাশেই। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই ঘরটির দেওয়ালে ফাটল ধরতে শুরু করে। বর্তমানে পাম্প ঘরটি প্রায় দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। জানালা, দরজাও নেই। ঘরটির একাংশ আবার মাটিতে বসে গিয়েছে। পাম্প ঘরটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গ্রাম থেকে পাহারাদারেরও ব্যবস্থা করা হয়। চাষের সময় পাম্প চালানো ও দেখাশোনার দায়িত্বও তাঁদেরই। পাহারাদারদের থাকার জন্য পাম্প ঘর লাগোয়া একটি ঘরও তৈরি করা হয়। কিন্তু পুরো পাম্প ঘরটির অবস্থা এখন এতটাই বেহাল যে গত বছর দু’য়েক ধরে কেউই আর ওখানে থাকতে চাইছেন না। পাম্প ঘরের পাহারার দায়িত্বে থাকা কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষ ও বিমলচন্দ্র ঘোষ। তাঁরা বলেন, “ঘরটির যা অবস্থা তাতে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। তাই ঘরের ভিতরে শুয়ে থাকা সম্ভব নয়। আবার বাইরে সাপের উপদ্রব থাকায় বাইরে থাকাও সম্ভব নয়।” বর্ষার সময় অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায় বলে খবর।
পাহারা না থাকায় বেশ কয়েকবার যন্ত্রাংশ চুরিরও চেষ্টা হয়েছে বলে জানা গেল। বেশ কয়েকবার গ্রামবাসীদের উদ্যোগে চুরি রোখা গেলেও প্রতিবার তা ঠেকানো যায় নি। পাম্প ঘরটির বাইরে থাকা লোহার পাইপগুলি চুরি যায়। এরপরেই চুরি রুখতে গ্রামবাসীরা পাম্প ঘরের যন্ত্র ও অন্যান্য দামি জিনিসগুলি নিজেদের বাড়ি নিয়ে যান। সেচ প্রকল্প দেখভালের জন্য একটি বেনিফিশিয়ারি কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটির সম্পাদক নির্মল মণ্ডল জানান, ঘরটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। নির্মলবাবু আরও জানান, ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর একদল দুষ্কৃতী পাম্পের মোটর চুরি করতে আসে। কিন্তু পাহারাদার ও গ্রামবাসীদের তত্পরতায় সে যাত্রায় মোটরটি বেঁচে যায়।
পাম্প ঘরটি বেহাল হওয়ায় ঠিক মতো জল না মেলায় গত বছর গ্রামের প্রায় ৮০ একর জমিতে বোরো চাষ করা যায় নি বলে বাসিন্দারা জানান। গ্রামবাসীরা জানান, এ বছর বর্ষায় ভাল বৃষ্টি না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ওই পাম্পহাউসটিতেই ফের যন্ত্রপাতি বসিয়েকাজ চালানো হচ্ছে।
পাম্প ঘরটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশাসন সব জায়গাতেই দরবার করা হয়েছে, কিন্তু কোনও লাভ হয় নি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। নির্মলবাবু বলেন, “আমরা এই সেচ প্রকল্প ঘরটির করুণ অবস্থার কথা জানিয়ে বহু চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু কেউই নজর দেননি।”
আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বিডিও দিপ্তীময় দাস বলেন, “বিষয়টি আমরা ঠিক জানা নেই। গ্রামবাসীরা আমরা কাছে আবেদন জানালে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।” সেচ দফতরের সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টি তাদের নজরে আছে, দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy