Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভাঙনে ডুবল ৪০ বাড়ি, পুনর্বাসনের আবেদন

পূর্বস্থলীর এই এলাকায় ভাগীরথীর ভাঙনের সমস্যা দু’শকেরও বেশি পুরনো। নদীর পাড় যত ভেঙেছে এলাকা তত পিছিয়েছে। চাষের জমি, বাস্তু ভিটা, ধানের গোলা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন, তাঁত সমবায়ের কার্যালয়-সহ বহু কিছু তলিয়ে গিয়েছে নদীতে।

বিপদ: ভাগীরথীর জলে তলিয়েছে ঘরবাড়ি, তামাঘাটায়।—নিজস্ব চিত্র।

বিপদ: ভাগীরথীর জলে তলিয়েছে ঘরবাড়ি, তামাঘাটায়।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০১
Share: Save:

ভাঙন বেড়েই চলেছে পূর্বস্থলীর তামাঘাটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তলিয়ে গিয়েছে প্রায় চল্লিশটি বাড়ি। ফলে পুজোর আগে ঘরহারা পরিবারগুলির ঠাঁই হয়েছে আত্মীয়ের বারান্দা অথবা খোলা মাঠে তাঁবুর নীচে। শুক্রবার পুনর্বাসন চেয়ে মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

পূর্বস্থলীর এই এলাকায় ভাগীরথীর ভাঙনের সমস্যা দু’শকেরও বেশি পুরনো। নদীর পাড় যত ভেঙেছে এলাকা তত পিছিয়েছে। চাষের জমি, বাস্তু ভিটা, ধানের গোলা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন, তাঁত সমবায়ের কার্যালয়-সহ বহু কিছু তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। এক সময়ের জমি মালিকেরা এখন অন্যের জমিতে খেতমজুরের কাজ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জাননা, বেশ কয়েক বার খাঁচায় পাথর ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। বছর দেড়েক আগে শেষ নদীর পাড়ে খাঁচা ফেলা হয়। তারপর থেকে প্রশাসনের তরফেও আর কোনও উদ্যোগ হয়নি বলে বাসিন্দাদের দাবি। তাঁরা জানান, সপ্তাহ খানেক ধরে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে কুণ্ডুপাড়ায়। ইতিমধ্যে ৪০টি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। আরও ২৫টি বাড়ি নদীর পাড় ঘেঁষে ঝুলছে বলেও তাঁদের দাবি।

এ দিন মহকুমাশাসকের কাছে দেওয়া আবেদনপত্রে এলাকার বাসিন্দারা জানান, তাঁদের বেশির ভাগেরই দিন আনি দিন খাই দশা। তার মধ্যে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় ভোগান্তির শোষ নেই। ব্লক অফিস থেকে চাল, ত্রিপল, ধুতি পেলেও এই মুহূর্তে তাঁদের প্রয়োজন বসবাসের জায়গা। লক্ষ্মণ প্রামাণিক, মহাদেব প্রামাণিক, মানেক অবতারেরা বলেন, ‘‘যাঁরা ঘর হারিয়েছি তাঁদের বেশির ভাগই বিভিন্ন গ্রামে খেতমজুরি করে সংসার চালাই। দুর্গোৎসবের আগে ঘর হারিয়ে চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছি।’’

এ দিন নিজের কার্যালয়ে তামাঘাটা এলাকার গৃহহীনদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। তিনি জানান, শুধু সম্প্রতি যাঁদের ঘর হারিয়েছে তাঁদেরই নয় ওই এলাকায় গত দু’বছরে ভাঙনে ১০০ জন গৃহহারাকে গীতাঞ্জলী প্রকল্পে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ করে বাড়ি করে দেওয়া হবে। যাঁদের জমি নেই তাঁদের জমি পাট্টা দেওয়া হবে। জমি খোঁজার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। মহকুমাশাসকের দাবি, সেচ দফতর তামাঘাটা এলাকায় ভাঙন মেরামতির জন্য দ্রুত কাজ শুরু করতে চলেছে।

পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে বাঙনের ভয়াল রূপ দেখেছি। ঘরহারাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Landslide Bhagirathi River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE