Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নামে বিভ্রাট, বালক হোমেই

৪ অক্টোবর মা-বাবার সঙ্গে পূর্বস্থলীর ফলেয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসার পরে নিখোঁজ হয়ে যায় আসিদুল। ৬ অক্টোবর তার বাবা আজাই খান পূর্বস্থলী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

বাবা-মায়ের সঙ্গে আসিদুল। শনিবার কালনায়। নিজস্ব চিত্র

বাবা-মায়ের সঙ্গে আসিদুল। শনিবার কালনায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

আধার কার্ডের সূত্রে হদিস মিলেছিল নিখোঁজ ছেলের। কিন্তু আধারে নাম ভুলের জটে অনাথ আশ্রম থেকে সোমবার বাড়ি ফেরা হল না নদিয়ার কালীগঞ্জের শেরপুরের বছর দশেকের আসিদুল খানের। তার বাবার নিজের আধার কার্ড ও ছেলের আধার কার্ডে নাম আলাদা থাকায় আপাতত সে ফেরত গেল হোমেই।

৪ অক্টোবর মা-বাবার সঙ্গে পূর্বস্থলীর ফলেয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসার পরে নিখোঁজ হয়ে যায় আসিদুল। ৬ অক্টোবর তার বাবা আজাই খান পূর্বস্থলী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে রসুলপুর এলাকা থেকে এক বালককে উদ্ধার করে পুলিশ। নাম-ঠিকানা ঠিকমতো বলতে না পারায় তাকে চাইল্ডলাইনের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। সেখান থেকে ১৮ অক্টোবর তাকে কালনার এক অনাথ আশ্রমে পাঠানো হয়। আশ্রম কর্তৃপক্ষ ছেলেটির আধার কার্ড তৈরিতে উদ্যোগী হতেই তার ঠিকানা মেলে। ৭ ডিসেম্বর আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, ছেলেটির ইতিমধ্যে আধার কার্ড রয়েছে। তার নাম সাহিদুল। আধার কার্ডে ঠিকানা উত্তর-পশ্চিম দিল্লির সাহিবাবাদে। পুলিশ যোগাযোগ করার পরে শুক্রবার তার বাবা-মা আশ্রমে এসে ছেলেকে দেখেন।

পুলিশ শনিবার আসিদুলকে কালনা আদালতে পাঠায়। এ দিন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ডালিয়া ভট্টাচার্য তার জবানবন্দি নেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালত শিশুটিকে তার মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নথিপত্র চায়। তা দিতেই বিপত্তি বাধে। দেখা যায়, আসিদুলের বাবার আধার কার্ডে নাম রয়েছে হাবিবুল শেখ। অথচ, আসিদুলের আধার কার্ডে বাবার নাম লেখা আজাই শেখ। পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরিতেও আসিদুলের বাবা হিসেবে আজাই শেখের নাম ছিল। এই নাম বিভ্রান্তিতে আদালত ছেলেটিকে তদন্তকারী অফিসারের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। বিকেলে তদন্তকারী অফিসার জয়দেব দে আসিদুলকে রেখে আসেন আশ্রমে। আশ্রম কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি চাইল্ডলাইনে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আশ্রমের অন্যতম কর্তা বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য জানান, দ্রুত চাইল্ডলাইনকে জানিয়ে নির্দেশ চাওয়া হবে।

এ দিন আসিদুলকে নিতে আশ্রমে আসেন বেশ কয়েকজন আত্মীয়। তবে নামের জটে শেষ পর্যন্ত তাকে নিয়ে যেতে না পারায় মনখারাপ প্রত্যকেরই। তার দিদা সরিফা বিবি নাতিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘‘জামাই নাতির আধার কার্ডে নিজের নামটা সংশোধন করে নিলে এই ঝক্কি পোহাতে হত না।’’ আসিদুলের মামা আলি আকবর খান বলেন, ‘‘পুলিশ জানিয়েছে, আজাই ও হাবিবুল যে একই ব্যক্তি, সে ব্যাপারে একটি এফিডেভিড ও পঞ্চায়েতের শংসাপত্র দরকার। আমার দ্রুত তা জোগাড়ের ব্যবস্থা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE