দলের সাংসদকে নিয়ে জনা তিরিশ নেতা-কর্মীর কর্মসূচি শুরু হয়েছিল শান্তিপূর্ণ ভাবেই। শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫টি বাড়িতে প্রচার সেরে দুপুর দেড়টা নাগাদ বিজেপি-র দলটি এগোচ্ছিল ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দিকে। পরিকল্পনা ছিল, তার পরে ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার সেরে যাওয়া হবে কালনা ২ ব্লকের বোয়ালিয়া ও পিন্ডিরায়। বোয়ালিয়ায় মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থাও ছিল একটি বাড়িতে। কিন্তু তার আগে হামলার মুখে পড়তে হবে তাঁরা ভাবেননি, দাবি বিজেপি নেতাদের।
শনিবার দুপুরে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠিগঙ্গা এলাকায় বিজেপি-র পতাকা আঁটা মোটরবাইকে এগোচ্ছিলেন নেতা-কর্মীরা। পিছনে গাড়িতে ছিলেন সাংসদ জর্জ বেকার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী অর্পিতা বেকার, পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট অগ্নিশ জায়সবাল, দলের ট্রেডার্স সেলের কনভেনার পঙ্কজ কেডিয়া-সহ কয়েক জন। অভিযোগ, একটি তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ে সেখান থেকে লাঠি, রড, উইকেট হাতে বেরিয়ে আসে কয়েক জন। বিজেপি কর্মীদের মারধর, সাংসদের গাড়ি ভাঙচুর ও তাঁকেও মারধর করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে বিজেপি নেতারা পুলিশে খবর দেন। এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় সেখানে পৌঁছলে সাংসদ তাঁকে বলেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই কর্মসূচি চালাচ্ছিলাম। তাহলে কেন হামলা?’’ এসডিপিও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কালনা হাসপাতালে চিকিৎসার পরে সাংসদ কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
আক্রান্ত সাংসদের স্ত্রী অর্পিতাদেবী বলেন, ‘‘উনি বরাবরই রং না দেখে কাজ করেন। তাঁর উপরে হামলা, ভাবা যায় না!’’ তাঁদের সঙ্গে থাকা বিজেপি নেতা কৌশিক দাসগুপ্ত, উদয় ঘোষদের অভিযোগ, ‘‘বিজেপির উত্থান ঠেকাতে পরিকল্পিত হামলা শাসকদলের। শুধু সাংসদ নন, আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন নেতা-কর্মী।’’
বিস্তারক কর্মসূচিতে ভয় পেয়ে তৃণমূল রাজ্যের নানা প্রান্তেই তাঁদের নেতা-কর্মীদের উপরে এমন হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তাঁর দাবি, ‘‘এই ভাবে বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধি এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ঠেকানো যাবে না।’’ বিজেপি-র অভিযোগ, এ দিন হামলার নেতৃত্ব দেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সমরজিৎ হালদার।
সমরজিৎবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। কালনা শহর তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, বিজেপি-র লোকজন তাঁদের কার্যালয়ে ঢুকে কর্মীদের মারধর করেছে। শহর তৃণমূল হামলার অভিযোগ ওড়ালেও জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, দলীয় নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত। দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, তৃণমূল এমন ঘটনা সমর্থন করে না।
কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায় জানান, সাংসদ পাঁচ জনের নামে অভিযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে তিন জন ও আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কাউন্সিলরের দাদা বাপি হালদারও। কাউন্সিলর অধরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy