Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বর মাঝ রাস্তায়,রুখল প্রশাসন

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ের খবর পান মহকুমাশাসক। পাত্র পেশায় রাজমিস্ত্রি। বাড়ি কাছেই পাতিলপাড়া গ্রামে। এরপরেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মালবিকা খাটুয়া যান ওই গ্রামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ১০:২০
Share: Save:

বিয়েবাড়ির সব গোছগাছ সারা। সাড়ে তিনশো নিমন্ত্রিতের রান্নাও প্রায় শেষ। হঠাৎ বাড়িতে হাজির প্রশাসনের কর্তা। আত্মীয়স্বজন প্রশ্ন করতেই নির্দেশ আসে, ১৩ বছরের মেয়ের বিয়ে বন্ধ করতে হবে। মাথায় হাত পড়ে বাবা-মার। তবে কমবয়সে বিয়ের কুফল বোঝানোর পরে ওই পরিবার জানিয়ে দেন, আঠেরোর আগে মেয়ের বিয়ে আর দেবেন না তাঁরা।

শুক্রবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল কালনার বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের ওসমানপুর। পরে হবু বর-কনের পরিবারকে একসঙ্গে ডেকে কথাও বলেন কালনার মহকুমাশাসক।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ের খবর পান মহকুমাশাসক। পাত্র পেশায় রাজমিস্ত্রি। বাড়ি কাছেই পাতিলপাড়া গ্রামে। এরপরেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মালবিকা খাটুয়া যান ওই গ্রামে। ১২টা নাগাদ তিনি পৌঁছে দেখেন, বিয়ের প্রস্তুতি শেষ। বরযাত্রী মাঝ পথে। প্রথমে পরিবারের তরফে বাধা এলেও পরে সবাই বিয়ে না দেওয়ার কথায় রাজি হন।

ওই সময়েই ট্রেজারি ভবনে আন্তর্জাতিক ‘মিসিং চিলড্রেন ডে’ উপলক্ষে একটি বৈঠক চলছিল। বেশ কয়েকজন কন্যাশ্রী প্রাপকদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন মহকুমাশাসক নিতীন সিংহানিয়া। দুই পরিবারকে ডেকে পাঠান তিনি। ওই ছাত্রীর পরিবার দাবি করে, তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই এক আত্মীয়ের ছেলের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। মহকুমাশাসক তাঁদের স্পষ্ট জানান, মেয়ের ১৮ এবং ছেলের ২১ বছর হওয়ার আগে বিয়ে দেওয়া বেআইনি। কমবয়সে বিয়ে হলে মেয়েটির শরীর ও মনে কী প্রভাব পড়তে পারে তাও জানানো হয়। দু’পক্ষই মেনে নেন সে কথা। থমকে যাওয়া পড়াশোনা ফের শুরু করতে রাজি হয় ওই ছাত্রীও।

মহকুমাশাসক বৈঠকে হাজির কন্যাশ্রীদের পরামর্শ দেন, এরকম পরিস্থিতি হলে রুখে দাঁড়াতে হবে। খবর পৌঁছে দিতে হবে প্রশাসনের কাছে। হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী রিয়া সরকার জানায়, তালবোনা এলাকায় তাদের এক সহপাঠী রয়েছে। তার বিয়ের কথা চলছে। আর এক ছাত্রী সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বারাসতে বাড়ি তার এক পরিচিত কালনার বারুইপাড়া এসেছেন মাসির বাড়ি। তাকেও স্বল্প বয়সে পরিবারের চাপে বিয়েতে রাজি হতে হয়েছে। মহকুমাশাসক দু’বাড়িতেই প্রশাসনিক দল পাঠানোর আশ্বাস দেন। নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘খুব ভাল ভূমিকা কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Minor Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE