Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

জলের দাবিতে বিক্ষোভ, কান্না কাউন্সিলরের

পানীয় জলের আকাল চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। সোমবার ঝড়ের পরে তা আরও বেড়েছে। বুধবার সকালে এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। জল না এলে দিনভর অবস্থানের হুমকি দেন তাঁরা।

বিক্ষোভের মুখে ভেঙে পড়লেন কাউন্সিলর মনি সোরেন।—নিজস্ব চিত্র।

বিক্ষোভের মুখে ভেঙে পড়লেন কাউন্সিলর মনি সোরেন।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০০:১৩
Share: Save:

পানীয় জলের আকাল চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। সোমবার ঝড়ের পরে তা আরও বেড়েছে। বুধবার সকালে এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। জল না এলে দিনভর অবস্থানের হুমকি দেন তাঁরা। চাপের মুখে ভেঙে পড়ে কেঁদে ফেলেন তৃণমূল কাউন্সিলর মনি সোরেন। তাঁর দাবি, বারবার পুরসভায় বলেও কোনও ফল হয়নি।

সিটি সেন্টারের অদূরে পলাশডিহা এলাকাটি পড়ছে দুর্গাপুর পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তিন মাস ধরে পানীয় জলের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। বেশিক্ষণ জল দেওয়া হয় না। তা ছাড়া জলের বেগও বেশ কম। কাউন্সিলরকে তাঁরা বারবার সমস্যার কথা বলেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টায়নি। সোমবার ঝড়ে বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ে যাওয়া ও খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় জল শোধনাগারে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ মেলেনি। সে কারণে শহরের সর্বত্র কমবেশি পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে পলাশডিহায়। বুধবার সকালে শ’তিনেক স্থানীয় বাসিন্দা কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অবিলম্বে সমস্যা না মিটলে অবস্থান-ধর্নার হুমকি দেন তাঁরা।

কাউন্সিলর মনিদেবী বারবার জানান, তিনি পুরসভায় বহু বার এ ব্যাপারে দরবার করেছেন। কিন্তু বাসিন্দারা তা শুনতে চাননি। তাঁরা বলতে থাকেন, ভোট দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছে। সুতরাং দায় নিতে হবে কাউন্সিলরকেই। নিজেকে তৃণমূল সমর্থক পরিচয় দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এসেছি পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। সমস্যার সুরাহা করতেই হবে। দিন-দিন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।’’ আর এক বাসিন্দা সুমিত্রা চৌধুরী বলেন, ‘‘কোনও দিনই ঠিক মতো জল দেওয়া হয় না আমাদের। বিশেষ করে এই গরমে আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’

জল সমস্যা নিয়ে একাধিক বার পুরসভায় দরবারের কথা কাউন্সিলর জানালেও বাসিন্দাদের ক্ষোভ মেটেনি। এক সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন মনিদেবী। শেষে ফরিদপুর ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কাউন্সিলর মনিদেবী বলেন, ‘‘আমি সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি। পুরসভায় বৈঠক করেছি। তা-ও কোনও সুরাহা হয়নি।’’ মনিদেবীর মা শ্রীমতি সোরেনের দাবি, ‘‘জল সরবরাহ ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব পুরসভার ওই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদের। অযথা আমার মেয়ের উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’ মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) প্রমোদ সরকারের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। শহরের ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মনিদেবীর বাড়িতে গিয়ে এ ভাবে চাপ দেওয়া ঠিক হয়নি। ক্ষোভ জানাতেই হলে বাসিন্দাদের পুরসভায় আসা উচিত ছিল। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধিও থাকতে পারে।’’ তবে জলের সমস্যা যে রয়েছে, সে কথা মেনে নিয়েছেন ডেপুটি মেয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE