Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

রেশন কম পুজোর মুখে, ক্ষোভ

ডিজিটাল কার্ড নেই, এমন গ্রাহকদের জন্য কম এসেছে সামগ্রী। বাকি সামগ্রী কবে পাওয়া যাবে, জানা নেই কোনও পক্ষেরই। ফলে, পুজোর আগে বারবার গ্রাহক-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে শিল্পাঞ্চলের রেশন ডিলারদের।

রানিগঞ্জে রেশন দোকানের সামনে জটলা। —নিজস্ব চিত্র।

রানিগঞ্জে রেশন দোকানের সামনে জটলা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৩
Share: Save:

ডিজিটাল কার্ড নেই, এমন গ্রাহকদের জন্য কম এসেছে সামগ্রী। বাকি সামগ্রী কবে পাওয়া যাবে, জানা নেই কোনও পক্ষেরই। ফলে, পুজোর আগে বারবার গ্রাহক-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে শিল্পাঞ্চলের রেশন ডিলারদের। রোষ থেকে বাঁচতে অনেক ডিলার দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন। অনেকে পুলিশ ডাকছেন। সমস্যা না মিটলে অক্টোবর থেকে ডিজিটাল কার্ড না থাকা গ্রাহকদের বরাদ্দ সামগ্রী না তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রেশন ডিলাররা। যদিও জেলা খাদ্য দফতরের আশ্বাস, সমস্যা শীঘ্র মিটে যাবে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রেশনে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ নিয়ে আসানসোল মহকুমার নানা জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পুলিশকে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। সম্প্রতি সালানপুরের নানা রেশন দোকানে বিক্ষোভ দেখিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন গ্রাহকেরা। সামডি রোড অবরোধ করা হয়। আসানসোলের পড়িরা গ্রামেও একাধিক রেশন দোকানে বিক্ষোভ হয়। সেখানে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন এলাকার কাউন্সিলরও। আসানসোলের সেটে কন্যাপুরে গ্রাহক বিক্ষোভে দোকানে তালা দিয়ে পালান এক মালিক। সোমবার রানিগঞ্জের বল্লভপুরে যে দোকানে বিক্ষোভ হয়, তার মালিকেরাও জানান, জনরোষ থেকে বাঁচতে দোকান বন্ধ রাখার কথা ভাবছেন তাঁরা। সব ক্ষেত্রেই গ্রাহকদের এক অভিযোগ, ডিজিটাল কার্ড না থাকলে সরকার নির্ধারিত খাদ্যশস্য দেওয়া হচ্ছে না।

কেন এই পরিস্থিতি? জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাহক প্রতি সপ্তাহে দু’কেজি চাল ও তিন কেজি গম বা আটা দেওয়ার কথা। কিন্তু যাঁদের ডিজিটাল কার্ড নেই তাঁদের ছ’শো গ্রাম চাল ও ন’শো গ্রাম গম বা আটা দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। সেখানেই গোল বেধেছে। বর্ধমান রেশন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পরেশ হাজরা জানান, সরকারের তরফে তাঁদের কাছে এই পরিমাণ সামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু গ্রাহকদের তা জানাতে জন্য কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। ফলে, গ্রাহকরা বিশ্বাস করতে চাইছেন না। তাঁরা মনে করছেন, রেশন ডিলাররা কারচুপি করছেন। পরেশবাবু বলেন, ‘‘এই অবস্থায় নিজেদের পিঠ বাঁচাতে আমরা ঠিক করেছি, সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি না করা পর্যন্ত আমরা ডিজিটাল কার্ড না থাকা গ্রাহকদের জন্য রেশনের জিনিস তুলব না।’’

খাদ্য দফতরের বর্ধমান জেলার কন্ট্রোলার দেবমাল্য বসু মেনে নেন, হঠাৎ খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ফলে শুধু আসানসোল শিল্পাঞ্চলে নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকদের এই ক্ষোভ ও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়েছিস যেটুকু সামগ্রী কম পড়েছে তা দ্রুত দিয়ে দেওয়া হবে। গ্রাহকদের চিন্তার কিছু নেই। সমস্যা মিটে যাবে।’’ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুরেও এক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেখানে বকেয়া মেটানো হয়েছে।

বল্লভপুরেও গ্রাহক-বিক্ষোভ

সাত সকালে রেশনের দোকানে সাঁটানো দুটি বিজ্ঞপ্তি দেখে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। সোমবার বল্লভপুরে সকাল ৭টা থেকে প্রায় ১০টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। গ্রাহকদের দাবি, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে নতুন কার্ড না থাকলে কেউ রেশন পাবেন না। অথচ, গ্রামের ৮০ শতাংশ লোক আবেদন করেও নতুন কার্ড পাননি। বাসিন্দারা আরও জানান, ভোটের আগে নতুন রেশন কার্ড না পাওয়া পর্যন্ত পুরনো কার্ডেই রেশন মিলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন এমন বিজ্ঞপ্তি কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। তবে দোকানের দুই মালিক পার্থ বিদ ও অপূর্বকুমার দাসের দাবি, সরকারি নির্দেশ মেনেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE