Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পাহারা কম, রাতে দৌরাত্ম্য রাজবাড়িতে

স্থানীয় সূত্রের দাবি, বিকেল গড়াতেই দলে-দলে রাজবাড়ি চত্বরে হাজির হচ্ছে উচ্ছৃঙ্খল যুবক। তারা লালজি মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে দৌরাত্ম্য শুরু করছে। তাদের দাপাদাপিতে ওই চত্বরে থাকতে পারছেন না মহিলারা।

এই চত্বরেই অসামাজিক কাজকর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র

এই চত্বরেই অসামাজিক কাজকর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২৬
Share: Save:

সকাল থেকে পর্যটকদের ভিড়। মুগ্ধ হন পুরাতাত্ত্বিক নির্দশন দেখে দেশ-বিদেশ থেকে আসা মানুষজন। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামতেই পাল্টে যায় এলাকা। জমায়েত হয় কিছু যুবক। নানা অসামাজিক কাজকর্ম, ইভটিজিংয়ের জেরে নাকাল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। কালনা রাজবাড়ি চত্বরে এই ধরনের উপদ্রব শুরু হয়েছে অভিযোগ করে এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে পুরতত্ত্ব বিভাগ।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, বিকেল গড়াতেই দলে-দলে রাজবাড়ি চত্বরে হাজির হচ্ছে উচ্ছৃঙ্খল যুবক। তারা লালজি মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে দৌরাত্ম্য শুরু করছে। তাদের দাপাদাপিতে ওই চত্বরে থাকতে পারছেন না মহিলারা। নানা রকম কটূক্তি-সহ কুৎসিত আচরণ করছে তারা। পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনে ঠাসা এই এলাকায় রয়েছে একটি খেলার মাঠ। অন্ধকার নামতেই তা নেশাড়ুদের দখলে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।

রাজবাড়ি চত্বরের উল্টে দিকে রয়েছে ১০৮ শিবমন্দির। রাতের অন্ধকারে এই মন্দিরের আশপাশেও কিছু যুবককে দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। বছর তিনেক আগে এই দুই এলাকায় পর্যটকদের নজর কাড়ার জন্য পর্যটন দফতর আধুনিক আলোর ব্যবস্থা করে। ফলে, সন্ধের পরেও প্রচুর মানুষের সমাগম হয় সেখানে। কিন্তু, ইদানীং এলাকাটি নিরাপদ নয় বলে অনেকেরই দাবি। শহরের বাসিন্দা কমলিকা মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘প্রায়ই এক দল যুবককে ওখানে আড্ডা দিতে দেখা যায়। ওরা মেয়েদের বিরক্তও করে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বেশি রাতে এলাকাটি যথেষ্ট অসুরক্ষিত। পুরাতত্ত্ব বিভাগের দু’জন পাহারাদার থাকলেও তাঁদের পক্ষে এতটা বড় এলাকা ঠিকমতো নজরে রাখা সম্ভব হয় না। এলাকার মন্দিরগুলিতে পুজার্চনার সঙ্গে যুক্ত এক পুরোহিতের কথায়, ‘‘উচ্ছৃঙ্খল যুবকের দল সন্ধে থেকে নানা মন্দিরে দাপিয়ে বেড়ায়। তাদের বারণ করেও কোনও ফল হয় না।’’

সম্প্রতি জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব, মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া এই দুই এলাকা পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুও। পরিদর্শন চলাকালীন বিধায়ক জানান, মন্দিরগুলিতে বেশ কিছু মূর্তি রয়েছে, যেগুলি বেশ মূল্যবান। এই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি। বিধায়কের দাবি, নিরাপত্তা বাড়লেই সন্ধের পরে এলাকায় অসামাজিক কাজকর্মেও লাগাম টানা যাবে। পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে। কিছু সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করলেও সমস্যা খানিকটা মেটানো যাবে।’’

মহকুমাশাসক জানান, বিষয়টি পুলিশের নজরে আনা হয়েছে। পুলিশের আশ্বাস, ওই চত্বরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anti social activities Burdwan Rajbari security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE