Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শিশুর মৃত্যুর পরে নর্দমা ঢাকায় নজর

রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হাটন রোডের আর্য সরণিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাবা-মায়ের সঙ্গে রিকশায় চেপে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিল আতিকা নাজ (৩)। তখন মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল।

বেহাল: সংস্কারের অভাবে নর্দমায় জমে আবর্জনা। ছবি: শৈলেন সরকার

বেহাল: সংস্কারের অভাবে নর্দমায় জমে আবর্জনা। ছবি: শৈলেন সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩০
Share: Save:

প্রায় ১৬ ঘণ্টা পরে নর্দমায় তলিয়ে যাওয়া শিশুর দেহ উদ্ধার হল আসানসোলে। সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ডিআরএম কার্যালয়ের কাছে বড় নর্দমা থেকে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ ও দমকল। রেলপাড়ের ঝিঁঝড়ি মহল্লায় নেমে আসে শোকের ছায়া। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এ দিন বলেন, ‘‘এই মর্মান্তিক মৃত্যুর দায় আমি নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আর যাতে এমন না ঘটে সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হাটন রোডের আর্য সরণিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাবা-মায়ের সঙ্গে রিকশায় চেপে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিল আতিকা নাজ (৩)। তখন মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল। আতিকার বাবা মহম্মদ আলমগীরের দাবি, রাস্তা দিয়ে প্রায় এক কোমর জল বইছিল। নর্দমার জলও উপচে রাস্তা ও নর্দমা আলাদা করা যাচ্ছিল না। চালক রাস্তা ঠাহর করতে না পেরে রিকশা উল্টে যায়। আশপাশের বাসিন্দারা রিকশা চালক ও শিশুর বাবা-মাকে উদ্ধার করতে পারলেও শিশুটি হাত ফসকে তলিয়ে যায়।

নর্দমা নিয়মিত সংস্কার না হওয়ার জেরেই বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয় দাবি করে ঘটনার পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করেন। নর্দমার পাশে রেলিং থাকলেও একটি অংশ খোলা ছিল। সেখান দিয়েই রিকশাটি গিয়ে পড়ে। নর্দমা খোলা থাকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। টানা প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে অবরোধ-বিক্ষোভ চলে। সোমবার দেহ মেলার পরে অবরোধ ওঠে। এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। তবে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

বাবার কান্না। নিজস্ব চিত্র

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কোথায় কতগুলি এই রকম খোলা নর্দমা আছে মেয়র তার তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যেক জায়গায় নর্দমার উপরে সিমেন্টের স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ছেন তিনি। জিতেন্দ্রবাবু জানান, ‘‘শহরের নর্দমাগুলি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। বর্ষার জন্য সাময়িক বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে।’’

সোমবার দেহ ময়না-তদন্তের পরে নিয়ে যাওয়া হয় রেলপাড়ের ঝিঁঝড়ি মহল্লায় শিশুটির বাড়িতে। রবিবার রাত থেকেই এলাকা ছিল থমথমে। সোমবার দেহ বাড়িতে পৌঁছনোর পরে প্রতিবেশীদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আলমগীর ও তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে জড়ো হন বহু মানুষ। আলমগীর কোনও কথাই বলতে পারছিলেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drains আসানসোল Death Baby
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE