Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দুইয়ে বিজেপি, বাড়ল ভোটও

বিজেপি সবথেকে ভাল ফল করেছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে মাত্র একশো ভোট কম পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের থেকে ৩৪৮ ভোট কম পেয়েছে বিজেপি।

উচ্ছ্বাস: বাজি পোড়াচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

উচ্ছ্বাস: বাজি পোড়াচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

একমাত্র কাউন্সিলর বছর দুয়েক আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ বারের পুরভোটে তাই অন্তত একটি আসন জিততে মরিয়া ছিল বিজেপি। দুর্গাপুরে সে আশা পূরণ হয়নি তাদের। সান্ত্বনা পুরস্কার বলতে, প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা।

অথচ এ বার দুর্গাপুর পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪১টিতেই প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের হিসাবে তারা শহরের ১৩টি ওয়ার্ডে এগিয়েছিল। কিন্তু, ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কোনও ওয়ার্ডে তারা দ্বিতীয়ও হয়নি। এ বারের পুরভোটের ফলাফলে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, ১৮টি ওয়ার্ডে তারা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। প্রদত্ত ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৩৬০টি ভোটের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৪৫ হাজার ৬৪৭ অর্থাৎ, ১৪ শতাংশের কিছু বেশি। বিধানসভা ভোটে শহরের দু’টি আসন মিলিয়ে তারা পেয়েছিল ৪১ হাজারের কিছু বেশি ভোট। ২০টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় হয়েও প্রদত্ত ভোটের ১০ শতাংশের কিছু বেশি পেয়ে বামেরা সার্বিক ভাবে রয়েছে তৃতীয় স্থানে।

বিজেপি সবথেকে ভাল ফল করেছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে মাত্র একশো ভোট কম পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের থেকে ৩৪৮ ভোট কম পেয়েছে বিজেপি। এ ছাড়া ৩৫ নম্বরে ৩৪৬৩, ৩০ নম্বরে ২৯১৫ এবং ৪৩ নম্বরে ২৪৭৮ ভোট পেয়েছে বিজেপি। বাকি ১৩টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় হলেও প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ বেশ কম। যদিও দলের নেতাদের দাবি, তৃণমূলের থেকে এমন ভোটের বড় ব্যবধানই প্রমাণ করছে, কী ভাবে ভোটের দিন ভোট লুঠ হয়েছে। যদিও তৃণমূল সে দাবি মানেনি।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম সমর্থকদের একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিলেন। বিধানসভা ভোটে সিপিএম তার অনেকটা পুনরুদ্ধার করে। পাশাপাশি কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতাও হয়। দুয়ের জেরে বিজেপির ফল খারাপ হয়েছিল। কিন্তু রামনবমীতে বড় মিছিল বার করা, মোদী মেলার আয়োজন, বিস্তারক যোজনার মতো কর্মসূচি নিয়ে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা নাগাড়ে চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি। পুরভোটের প্রচারে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহ, রাজ্য মহিলা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বারবার শহরে এসেছেন। দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল বেড়েছে।

এখানেই শেষ নয়, নির্বাচনের দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটলুঠের অভিযোগ তুললেও সিপিএমের নেতারা কিন্তু প্রতিরোধের রাস্তায় যাননি। সেখানে বিজেপি জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে ইভিএম ভাঙচুর, পুলিশকর্মীকে জখম করা, মোটরবাইক জ্বালিয়ে দেওয়া, এমনকী তৃণমূল কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার মতো ঘটনাতেও জড়িয়ে যায় বিজেপির নাম। পুলিশি তল্লাশির নামে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পর দিন মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভও দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।

সব মিলিয়ে শিল্পশহরে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে তাঁরা নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। দলের নেতা তথা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পঙ্কজকুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘লড়াই থামবে না। আগামী দিনে মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipal Election BJP Vote বিজেপি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE